প্রায় ১৫ বছর পর দেশে ফিরেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটি অন্যতম সদস্য ও আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিক এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রাক্তন সিনেটর প্রার্থী গিয়াস আহমেদ।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকায় হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করলে তার নির্বাচনী এলাকা ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ থেকে হাজারো জনতা এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন গিয়াস আহমেদ। তিনি স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ১/১১-এর বিরুদ্ধে এবং স্বাধীনতার মূলচেতনা ধ্বংসকারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করেছেন। আজ মুক্ত দেশে তিনি ফিরেছেন- এটি ভালো লাগার বিষয়। বিমানবন্দরে গিয়াস আহমেদ সবাইকে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত ও মুনাজাত শেষে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নেন।
গিয়াস আহমেদ দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা এবং উপস্থিত সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি বিদেশে থেকে বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই এই বিপ্লব সফল হয়েছে।
গিয়াস আহমেদ বলেন, দেশ ও দেশের জনগণ এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার কারণে আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার সরকার তার ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পরে তিনি দেশে আসা বন্ধ করে দেন। আজকে ভোট চোর ও টাকা লুটেরা সরকার এবং শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। শেখ হাসিনা যখনই আমেরিকা গিয়েছে তখনই বিমানবন্দর থেকে শুরু করে জাতিসংঘ পর্যন্ত সব জায়গায় তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ করেছি। এ কারণেই শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে আমার নামে বিমানবন্দরে নিষেধাজ্ঞা দেন, আমি যাতে বাংলাদেশে না আসতে পারি। শুধু তাই নয়, আমার বড় ভাইয়ের নামে ও অন্যদের নামে মিথ্য মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার স্বৈরাচার সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে রেখেছিল। মিথ্যা মামলা দিয়ে তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও নির্বাসনে পাঠিয়েছে। এ ছাড়াও লাখ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম-খুন করেছে। আমি বলবো- আওয়ামী স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়েছে। যতদিন না তাদের বিচার হবে ততদিন পর্যন্ত দেশের মাটিতে তাদের ঠাঁই হবে না।
প্রসঙ্গত, গিয়াস আহমেদ আমেরিকা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এবিসিসিআই) চেয়ারম্যান হিসেবে শহীদ পরিবার ফান্ডে ৫০ লাখ টাকার অনুদান প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেবেন। আগামী সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ওয়েস্টিন হোটেলে এবিসিসিআইর একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আগামী ২৬ ডিসেম্বর শেরাটন হোটেলে এনআরবি ওয়ার্ল্ড বিজনেস সামিটের উদ্বোধনী বক্তব্য দেবেন বলে জানান।
মন্তব্য করুন