বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে বদ্ধপরিকর জামায়াত। জনগণ জামায়াতের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে আমরা ১৮ কোটি মানুষের কাছে রাষ্ট্রের মালিকানা হস্তান্তর করব।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা জোনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক বিশাল র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
র্যালির পর আজমপুরে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উত্তরা পশ্চিম অঞ্চল পরিচালক ও মহানগরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। বিজয় র্যালিটি উত্তরা ১১ চৌরাস্তা জমজম টাওয়ারের সামনে থেকে শুরু হয়ে উত্তরা আজমপুর এসে শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির মোহাম্মদ আব্দুর রহমান মূসা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, মহানগর সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন, মহানগর উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এইচএম আতিকুর রহমান, উত্তরা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম, মহানগর মজলিসে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, মাজহারুল ইসলাম, আবু সাঈদ, মতিউর রহমান প্রমুখ।
র্যালিতে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা অংশ নিয়ে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘ বিজয় দিবস দিচ্ছে ডাক, ফ্যাসিবাদ নিপাত যাক’; ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার-সাবধান’, ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’, ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘গোলামি না আজাদী; আজাদী-আজাদী’, ‘স্বৈরাচারের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’সহ নানাবিধ স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ব্যক্তিগত, দলীয় ও পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করতেও কসুর করেনি। তারা পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও নিজেদের আদর্শবিরোধীদের স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যা দিয়ে অপরাজনীতি করেছে। তারা বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে রাজাকার বলতে কসুর করেনি। বাকশালীরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে রাজাকারের সঙ্গে জঙ্গি তকমা লাগিয়েছিল। অথচ শেখ হাসিনাই ছিল জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তারা নিজেরা রাজাকারের তালিকা করে ১০ হাজার স্কোর অর্জন করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা নিজেরাই জামায়াতে কোনো রাজাকার খুঁজে পায়নি। তাই জঙ্গিবাদের প্রতিভূদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে রীতিমতো ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত করেছিল। শেখ হাসিনা দেশের মেধাবীদের রাজাকারের নাতি-পুতি আখ্যা দেওয়ায় সেদিনই তার নৈতিক পতন হয়েছিল। তার উচিত ছিল বাস্তবতা মেনে নিয়ে পদত্যাগ করা।
তিনি আরও বলেন, জামায়াত দেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। জনগণ জামায়াতের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে আমরা ১৮ কোটি মানুষের কাছে রাষ্ট্রের মালিকানা হস্তান্তর করব। কারণ, জনগণ রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক। আমরা দেশকে এমন এক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই যেখানে কোনো অপশাসন-দুঃশাস থাকবে না, থাকবে না কোনো বৈষম্য ও দখলদারিত্ব। আমরা জনগণকে দুর্নীতি, লুটপাট, হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমুক্ত আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। জামায়াত জাতীয় সংসদে সব শ্রেণি ও মতের মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। তারা রাজপথের পরিবর্তে মহান জাতীয় সংসদে তাদের অধিকার ও দাবি-দাওয়া সম্পর্কে কথা বলতে পারবেন। তাদের সব যৌক্তিক দাবি পূরণ করা হবে।
মন্তব্য করুন