বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের নীলনকশা আজও বিদ্যমান। আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিনাশ করার চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে তারেক রহমান এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ওই অপশক্তির এদেশীয় দোসররা নানাবিধ চক্রান্তজাল রচনা করে আমাদের বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করে চলেছে। এরা ১৬ বছর ধরে প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করেছে। এদেশের মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা অদৃশ্য করে মানুষকে করে অধিকারহারা। এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ করা করা হয়। গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র হতাশা, ভয় আর নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে আসে।
বাণীতে তারেক রহমান বলেন, আজকের এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেসব নির্ভীক বীর শহীদদের কথা, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। পরাধীনতার হাত থেকে দেশের বিজয় অর্জনে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন- আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয় পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করার মাধ্যমে। দেশের অদম্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে এ বিজয় ছিনিয়ে আনে। তাই ১৬ ডিসেম্বর আমাদের গর্বিত এবং মহিমান্বিত বিজয় দিবস। আজকের এ মহান দিনে আমি সেসব বীর সেনাদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানাই।
এ ছাড়া তিনি বলেন, অধিকারহারা শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়েই ১৯৭১-এ এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। স্বাধীনতার পর সর্বনাশা ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে মাথাচাড়া দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয়, জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকার হরণ করে। কিন্তু প্রতিবারই এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে।
তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে অদৃশ্য ও হত্যা করে, পরিস্থিতি ভয়ংকর নৈরাজ্যময় হয়ে ওঠে। যিনি জীবনের দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন সেই অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছিল। ওই অশুভ শক্তি নীলনকশা বাস্তবায়নে রক্তপাতের ওপরই নির্ভর করেছে।
তিনি বলেন, ওদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে মহান বিজয় দিবসের প্রেরণায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে এবং ’২৪ এর জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার মৃত্তিকা-কাঁপানো আন্দোলনে পরাজিত হয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ।
পাশাপাশি তিনি বলেন, দেশে আবার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা ও শক্তিশালী গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের প্রত্যাশা জেগে উঠেছে। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সকলের প্রতি সেই আহ্বান জানাই। বিজয় দিবস উপলক্ষে আমি সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন আমাদের গণতন্ত্রের চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য অনেক কাজ করতে হবে, ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলতে হবে। বিজয়ের এদিনে আমি দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মন্তব্য করুন