খেলাফত মজলিসের অনুরোধে কাউন্সিল পিছিয়ে নিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান দাবি করে আজ বিকেল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এবি পার্টি। কিন্তু সকাল ১১টায় অনেকটা নাটকীয়ভাবে এবি পার্টি কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতারা। খেলাফতের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের একটি টিম এবি পার্টির নেতৃবন্দের সঙ্গে সমঝোতা সংলাপে মিলিত হন। সংলাপে মধ্যস্থতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা সংলাপের পর দুই দল জাতীয় ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে স্থান বিষয়ে জটিলতা নিরসনে একমত হন।
এতে বলা হয়, এ সময় খেলাফত মজলিসের নেতারা এবি পার্টি নেতৃবৃন্দকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন বৈধভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমেদন পাওয়া সত্ত্বেও তারা যেন মাঠটি তাদের অনুকূলে ব্যবহারের জন্য ছাড় দেন। খেলাফত নেতাদের অনুরোধে এবি পার্টি নেতারা বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় তাতে একমত হন। পরে দুদলের কেন্দ্রীয় নেতারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ও পরে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হক ও যুগ্ম আহবায়ক লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিনহাজুল আলম মিলন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানাসহ দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ১ম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিকট আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছিলাম। অপর পক্ষে খেলাফত মজলিসও ২৮ ডিসেম্বর তৃণমূল সংগঠকদের সম্মেলনের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে। গণপূর্ত অধিদপ্তর উভয় দলকেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চিঠি প্রদান করে। সর্বশেষ গণপূর্ত অধিদপ্তর ২৭, ২৮ ডিসেম্বর এবি পার্টিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ করে চূড়ান্ত চিঠি প্রদান করে। কিন্তু যাচাই বাছাইপূর্বক মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার সুপারিশ ভিত্তিক চিঠির উপর নির্ভর করে খেলাফত মজলিস প্রচার প্রচারণা, মেহমান দাওয়াত সম্পন্ন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ মুখে নিজেদের দলীয় সম্মেলনের গেট নির্মাণ করায় উভয় দলের সম্মেলন স্থান নিয়ে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় আজ খেলাফত মজলিসের নেতারা ও এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে দীর্ঘ সমঝোতা বৈঠকের পর আজ খেলাফত মজলিসের একটি প্রতিনিধি দল এবি পার্টির কার্যালয়ে এসে তাদের সম্মেলনে সহোযোগিতার অনুরোধ জানান। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খেলাফত মজলিসের নেতাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ১০ ও ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
তিনি আরও বলেন, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কতটা দায়িত্বহীন হলে একদল আবেদন করার পরও আরেক দলের আবেদন তারা কীভাবে গ্রহণ করে। তাদের এই দায়িত্বহীনতার কারণে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দুই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। আজ আমরা একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এই সমস্যার সমাধান করলাম।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, সকাল ১১টা থেকে আমরা এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসেছি যেখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন আমাদের সহোযোগিতা করেছেন। আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কাউন্সিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১১ জানুয়ারি করেছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
আশরাফ আলী আকন বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একত্রে আন্দোলন করেছি। আমাদের মানে ভুল বোঝাবোঝির কোনো সুযোগ নাই।
এবি পার্টির আহ্বায়ক প্রফেসর আব্দুল ওহাব মিনার সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন।
মন্তব্য করুন