বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর আদালত।
প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ১৫ বছর আগের এই মামলায় এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
জানা গেছে, ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অরগানাইজারের সঙ্গে মমতাজের লিখিত চুক্তি হয়। সেইমতো ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা।
তবে টাকা নেওয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি গায়িকা। পরে টাকা ফেরত দিতেও অস্বীকার করেন মমতাজ। এ ঘটনায় চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে বহরমপুর আদালতে একাধিক ধারায় মামলা করেন শক্তিশঙ্কর।
এই মামলায়, ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত। পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এরই মধ্যে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন গায়িকা।
পরে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী। ২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর একে একে তিনবার আগাম জামিন নেন এ গায়িকা।
গত ৯ আগস্ট আদালতে হাজিরা তারিখ ছিল মমতাজের। বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে জানানো হয় এই মুহূর্তে একটি কনসার্টের কারণে কানাডায় অবস্থান করছেন গায়িকা। তাই আদালতে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এমন অবস্থায় আগাম নোটিশ থাকা সত্ত্বেও আদালতে গায়িকা হাজির না হওয়ায় ফের তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এ বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শক্তিশঙ্কর বাগচী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার সাথে আমার চুক্তি হয়েছিল। বিনিময়ে তিনি ১৪ লাখ রুপি নিয়েছিলেন আমার থেকে। এরপর তিনি শো করেননি। যার জন্য আমাকে বড়সড় আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল। আমি এই ঘটনার পর বারবার ঢাকায় যাই। তাকে অনুরোধ করি আমার অনুষ্ঠান করে দেওয়ার জন্য। সব মিলিয়ে তাকে ৭৫ হাজারবার আমি ফোন করেছি। সমস্ত ফোন কলের ডিটেলস আমি আদালতে পেশ করেছি। এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল। কিন্তু তিনি আমাকে চেনেন না বলে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হলে তিনি মামলায় সহযোগিতা করবেন বলে আগাম জামিনও নেন। কিন্তু তিনি কোনো প্রকার সহযোগিতা করছেন না।’
মন্তব্য করুন