দেশীয় পণ্য কিনতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। পাশাপাশি দেশীয় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নেওয়ার প্রতিও আহ্বান জানান তিনি। রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা কারো প্রতি নির্ভরশীল হবো না, এ জাতীয়তাবাদী চিন্তা নিয়ে এগিয়ে যাব।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের চৌরাস্তা মোড়ে ‘দেশীয় পণ্য কিনে হও ধন্য’ শীর্ষক সমাবেশে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এতে বক্তব্য দেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, বিএনপি নেতা ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন, মোজাজ্জেদ আলী বাবু প্রমুখ।
এই সমাবেশের পর নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ি ন্যূনতম দাম দিয়ে দেশীয় শাড়ি ও লুঙ্গী বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশের প্রশ্ন এলেই ভারতে রসুনের মতো সবাই এক হয়ে যায়- উল্লেখ করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এর কারণ একটাই শেখ হাসিনা কেন বাংলাদেশের মসনদে নেই। শেখ হাসিনা তাদের এত প্রিয় কেন মোদি ও মমতাদের কাছে? এর কারণ শেখ হাসিনা বিনাপারিশ্রমিকে ও বিনা টাকায় যা ভারতকে দিয়েছে, এটা তো জাতীয়তাবাদী চিন্তার কোনো মানুষ দেবে না।
৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিনা টেন্ডারে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, মমতা তিস্তাচুক্তি বাস্তবায়ন করতে দিচ্ছে না, এ জন্য তো শেখ হাসিনা কোনো কথা বলেন না। অথচ বিএনপি বা কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকলে এর প্রতিবাদ করত, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরত। সীমান্ত হত্যাসহ ভারতীয় আগ্রাসন নিয়ে শেখ হাসিনা কোনো কথা বলেন না। এসব কারণেই শেখ হাসিনা ভারতের কাছে এত প্রিয়।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে ভারত নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিমসহ সব ধর্মের মানুষের যে সম্প্রীতি, কোনো অপপ্রচার করে তা ভাঙা যাবে না। অথচ আসামসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ধারাবাহিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ভারতকে উদ্দেশ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা নাকি চট্টগ্রাম দখলসহ নানা হুমকি দেন। আমরা কোনো দেশ দখল করতে চাই না। আমরা রক্তের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। আমরা একটি স্বাধীন দেশ, অন্য একটি স্বাধীন দেশের প্রতি সম্ভ্রম, শ্রদ্ধা ও সবার সমান বন্ধুত্ব মনে করি।
তিনি আরও বলেন, যখন আপনি দাবি করেন একটা, তখন খুঁজে দেখি আমরা কীভাবে দাবি করব। আমাদের যে নবাব ছিলেন ওনার রাজত্ব ছিল বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আমরা তখন এটা দাবি করব। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রধান সেনাপতি ছিলেন মোহনলাল। সেই পলাশীর আম্রকানন থেকে হিন্দু-মুসলিম আমরা একসঙ্গে যুদ্ধ করছি। আমরা একসঙ্গে পূজা-পার্বনে আনন্দ উপভোগ করি। ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে ৫ আগস্ট দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় বলেন, ভারতের দাসত্ব করার জন্য নয়। বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মের মানুষ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ আছি। কোনো ষড়যন্ত্রে এই সম্প্রীতির বন্ধন নষ্ট করা যাবে না।
পাড়া-মহল্লায় দেশীয় পণ্য কিনতে উৎসাহ দিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশি পণ্য কিনলে অর্থনৈতিক উন্নতি হবে, পণ্যের মান উন্নত হবে, দেশের কৃষক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। আমরা এখানে চিকিৎসাসেবার মান বাড়াব। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে আত্মমর্যাদার বলে মন্তব্য করেন নিপুণ রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, যতই ষড়যন্ত্র হোক, এ দেশে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে না।
মন্তব্য করুন