‘পতিত ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ গত পনেরো বছরে দেশে যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, তার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সিটি করপোরেশন অফিসের পাশে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর মিরপুর জোনের এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। সেখানে কেউ কেউ ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করেছে, তাদের ফিরিয়ে আনার কথা বলছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশকে ভারতের তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সেই আওয়ামী লীগের প্রশ্নে আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপস চলবে না। গণঅভ্যুত্থানের পর সবাই নিজ নিজ কাজে ফিরে গেছে। কিন্তু আপনাদের মনে রাখতে হবে, পরাজিত শক্তি যে কোনো সময় ফিরে আসতে পারে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়াগুলো পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, হিন্দু ভাইদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন হচ্ছে- এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর হতে পারে না। ভারতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা করেছে। একদিকে অপপ্রচার, অন্যদিকে হামলা- এসব করে ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। আমরা বলছি, দুই দেশের সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। তাহলে ভারত কেন বিরূপ আচরণ করছে? পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যারা বাংলাদেশি রয়েছে তাদের বলব- আপনারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলুন।
নুর বলেন, শেখ হাসিনার আমলে যে দানবীয় রাষ্ট্র গড়ে তোলা হয়েছিল, তার পরিবর্তনের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল। রাতারাতি নির্বাচন হলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না। আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই। সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে রাষ্ট্র সংস্কারকে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারে সব দলের প্রতিনিধি থাকলে তখন রাস্তায় আর আন্দোলন হবে না এবং রাষ্ট্র সংস্কারের কাজকেও তখন এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের পতন হলেও নতুন করে একদল চাঁদাবাজের উদ্ভব হয়েছে। আমরা সবাইকে বলবো, আপনারা নব্য চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হোন।
গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন, দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ প্রমুখ।
মন্তব্য করুন