‘নাগরিক স্বাধীনতা আর কখনোই বিপন্ন হবে না; অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। কোনোভাবেই যাতে আর ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয়, দেশ যেন গুম, গুপ্তহত্যা আর ক্রসফায়ারের নিষ্ঠুর জাঁতাকলের মধ্যে পতিত না হয়, রাষ্ট্র-সমাজের সর্বত্র যেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা পায়।’
স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিএনপির সহদফতর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেনের সই করা পাঠানো এক বার্তায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বার্তায় ফখরুল বলেন, ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে আমি বাংলাদেশি ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আশির দশকে দীর্ঘ ৯ বছরের স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র গণআন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে দেশবাসী গণতন্ত্রের স্বর্ণদ্বার অতিক্রম করে। শুরু হয় সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। এই দিনে গণতন্ত্রের দুশমনরা পরাজিত হলেও আজও তারা চুপ করে বসে থাকেনি। গণতন্ত্রের জাতশত্রু আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সঙ্গে চক্রান্ত শুরু করে নিরবচ্ছিন্ন। তাদের মিলিত শক্তি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী না করে বরং ক্রমাগত দুর্বল করতে থাকে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার যৌথভাবে বাংলাদেশকে একদলীয় দুঃশাসনের অরাজকতার মধ্যে ঠেলে দেয়। বারবার অপশক্তিগুলো গণতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করে আমাদের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। কিন্তু এ দেশের দেশপ্রেমিক জনগণ সে অপচেষ্টাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করেছে সব সময়। আমাদের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে তার অগ্রযাত্রায়। কিন্তু এ দেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ সব বাধাকে অতিক্রম করে গণতন্ত্রের পথচলাকে নির্বিঘ্ন করেছে। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র শৃঙ্খলমুক্ত হয়। একদলীয় শাসন ও একতরফা নির্বাচনের হাত থেকে এ দেশের জনসাধারণের মনে স্বস্তির ভাব ফুটে উঠেছে।
মানুষ আশা করে, নাগরিক স্বাধীনতা আর কখনোই বিপন্ন হবে না; অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে, মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। কোনোভাবেই যাতে আর ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয়, দেশ যেন গুম, গুপ্তহত্যা আর ক্রসফায়ারের নিষ্ঠুর জাঁতাকলের মধ্যে পতিত না হয়, রাষ্ট্র-সমাজের সর্বত্র যেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা পায়।
শপথ নিয়ে বিএনপির মহাসিব বলেন, একদলীয় লুটেরা কর্তৃত্ববাদ আর যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে, সে জন্য গণতন্ত্রকামী দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। স্বৈরাচার পতন দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ।
মন্তব্য করুন