ড. কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি, মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ‘ঐক্যবদ্ধ’ গণফোরামের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলটির সপ্তম জাতীয় সম্মেলনে নতুন এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আন্দোলনে নিহত ‘শহীদ’ মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়ার পিতা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু। উদ্বোধনী অধিবেশন পরবর্তীতে বিকেলে মোস্তফা মোহসীন মন্টুর সভাপতিত্বে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। অধিবেশনে উত্থাপিত সাংগঠনিক প্রস্তাব, রাজনৈতিক প্রস্তাব ও অর্থবিষয়ক প্রস্তাবের ওপর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা নেতারা আলোচনা করেন। সেখানে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি নির্বাচনের জন্য ‘বিষয় নির্বাচনী কমিটি’ গঠিত হয়। ওই কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি, মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি এবং ডা. মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে গণফোরামের ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। নির্বাচনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট সগির আনোয়ার। নির্বাচনী কমিটির পক্ষে নতুন কমিটির সদস্যদের নাম পড়ে শোনান সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নতুন কমিটিতে যিনি সভাপতি পরিষদের সদস্য হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে কামাল হোসেন এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বেরিয়ে আসা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিকের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সালের ২৯ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় গণফোরাম। সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিকের মৃত্যুর পর সাধারণ সম্পাদক হন মোস্তফা মহসীন মন্টু। তবে খুব বেশিদিন কেউই থাকেননি বা থাকতে পারেননি দলটিতে। প্রতিষ্ঠাকালীন অনেক সদস্যই বহু আগে সংগঠন ছেড়েছেন, আবার যোগ দিয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে বড় ঘটনাটি ঘটে ২০২০ সালে করোনা মহামারির মধ্যে ২৭ সেপ্টেম্বর। সেদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবে বর্ধিত সভা করে আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায় দলটি। এরপর এক করতে কয়েক দফা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি সেই উদ্যোগ। গণফোরামের বিভক্তির পর একাংশের নেতৃত্বে দেন ড. কামাল হোসেন। ড. রেজা কিবরিয়াকে কেন্দ্র করে দল ভাগ হলেও শেষ পর্যন্ত তিনিও গণফোরামে থাকেননি, যোগ দিয়েছিলেন গণঅধিকার পরিষদে। সেখান থেকেও পরে দল ছাড়েন তিনি।
গত বছরের ২৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশেষ কাউন্সিলে কামাল হোসেনকে ইমেরিটাস সভাপতি করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। যার সভাপতি হিসেবে মফিজুল ইসলাম খান এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান দায়িত্ব পান। গণফোরামের আরেক অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মোস্তফা মহসীন মন্টু। এই অংশে অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা ছিলেন।
‘ঐক্যবদ্ধ’ গণফোরামের নতুন কমিটিতে আরও রয়েছেন- সভাপতি পরিষদ সদস্য- অ্যাডভোকেট এসএম আলতাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, মোশতাক আহমেদ, অ্যাডভোকেট ফজলুল হক সরকার, অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম, হারুনুর রশিদ তালুকদার, শ্রী রতন ব্যানার্জী, আব্দুল হাসিব চৌধুরী, আবুল হাসনাত, অ্যাডভোকেট নিলেন্দু দেব, গোলাম হোসেন আবাব, অ্যাডভোকেট কাজী মেজবাহ উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী বাদল।
কোষাধ্যক্ষ - শাহ নূরুজ্জামান।
সম্পাদক পরিষদ- আয়ুব খান ফারুক, অধ্যক্ষ মো.ইয়াছিন, লতিফুল বারী হামিম, রফিকুল ইসলাম পথিক, মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, অ্যাডভোকেট একেএম রায়হান উদ্দিন, আলীনূর খান বাবুল, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম সজল, মো. নাজমুল ইসলাম সাগর, মামুনূর রশিদ মামুন, মির্জা হাসান, মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, আব্দুল হামিদ মিয়া, অ্যাডভোকেট বিশ্বজিৎ গাঙ্গুলী, অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন তালুকদার, তাজুল ইসলাম, রনজিদ সিকদার, আজিজুর রহমান ভূঁইয়া মজনু, অ্যাডভোকেট সানজিদ রহমান শুভ, আজাদ হোসেন, প্রভাষক বকুল ইমাম, মোমেনা আহমেদ মুমু, খনিয়া খানম ববি, মো. আশরাফুল ইসলাম, তৌফিকুল ইসলাম পলাশ, মো.আলী লাল, অ্যাডভোকেট মো. সাইফুলইসলাম, মো. মজিবুর রহমান শিবলু, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও ফারুক হোসেন।
মন্তব্য করুন