ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের যে বাড়ি থেকে ২০১০ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বের করে দেওয়া হয়েছিল, সেই বাড়িটি আবারও তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ দাবি জানান। জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ কবির মুক্তা ও সাধারণ সম্পাদক আকবার হোসেনসহ নেতাদের নিয়ে শহীদ জিয়ার সমাধিতে এই শ্রদ্ধা জানান আলাল।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়েন খালেদা জিয়া। বিএনপি তখন অভিযোগ করেছিল, বল প্রয়োগের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সেনানিবাসের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেনানিবাসের বাড়ি ছাড়ার পর ওইদিন সন্ধ্যায় গুলশানে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে কান্নাজড়িত কন্ঠে খালেদা জিয়া বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে তাকে প্রেসিডেন্ট জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছে।’
খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি ফিরিয়ে দেয়ার দিকে ইঙ্গিত করে প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা আলাল বলেন, মামলা চলাকালীন সময়ে, মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই মইনুল রোডের বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে এক কাপড়ে বের করে দেওয়া হয়েছিলো। তার সেই স্মৃতিবিজড়িত জায়গাটি নিয়ে এমন কিছু পদক্ষেপ নেন, যাতে তিনি (খালেদা জিয়া) তার ক্ষত সারিয়ে নিতে পারেন। একইসঙ্গে দেশবাসীও যাতে মনে করে, খালেদা জিয়ার প্রতি যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে- তার কিছুটা হলেও প্রতিকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া এ দেশের সূর্য সৈনিক। তিনি সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রী। তিনি সেনা দিবসে ক্যান্টনমেন্ট যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। সেখানে (সেনাকুঞ্জে) তার যে অনুভূতি বা অভিব্যক্তি দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে- একটি পাখিকে বহু বছর পায়ে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছিলো, সে পাখিকে মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারেরর প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা কিছুদিন আগে বলেছিলেন যে, নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)সহ চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে আমরা এর প্রথম পদক্ষেপ দেখলাম। সামনে নির্বাচনী ট্রেন কত দ্রুতগতিতে চলবে, তা আমরা সবাই বুঝতে পারবো। বিএনপি নতুন ইসির প্রতি আস্থা রাখতে চায়। তবে, আমরা ইসিকে কথা কম বলে কাজে বিশ্বাসী দেখতে চাই।
সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপিই সংস্থারের জনক। বিভিন্ন দফা পেশ করে পরবর্তীতে আমরা ৩১ দফার প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। আমরা যখন সংস্কারের প্রস্তাব পেশ করি, তার অনেক পরে ছাত্রবিপ্লব সংঘটিত হয়েছে।
এ সময় প্রচার দলের সিনিয়র সহসভাপতি আল আমিন, সহসভাপতি আজিজুস সামাদ, রুহুল আমিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিদুজ্জামান ডাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক এম আক্কাস আলী, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক রুহুল আমিন খান, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মোবারক হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রুবেল নিলয়, সহ-অর্থ সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমদ, সহ-মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সেলিনা রহমান, সদস্য খায়রুল ইসলাম শান্ত, আব্দুল বারেক শেখসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন