শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির এক কিশোর সবুজ মিয়া। বয়স তার ১৮। এইচএসসি পরীক্ষা যখন দিচ্ছিলেন, তখন সারা দেশে শুরু হয় ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ, গণবিক্ষোভ। শুরু হয় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান। সবুজের মন বসছিল না পড়ার টেবিলে, বই-খাতা ছেড়ে যোগ দেন দেশের ডাকে গণআন্দোলনে।
অতঃপর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ হন কিশোর সবুজ মিয়া।
সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে শহীদ সবুজ মিয়া এবং তার অসহায় পরিবারের বিস্তারিত খবর ছাপা হয়।
এমন খবর দেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাৎক্ষণিকভাবে দলের ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সদস্যদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এদিকে, প্যারালাইজড পিতার একমাত্র সম্বল সবুজ মিয়াকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় পরিবারটি। সেই শহীদ সবুজ মিয়ার পিতার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমান।
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে সবুজ মিয়া।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শহীদ সবুজ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার পিতা আজাহার আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল।
অসুস্থ আজহার আলীকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। যে কোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান থাকবেন বলে জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন— ময়মনসিংহ বিভাগীয় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সহসভাপতি ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সিনিয়র সদস্য মাসুদ রানা লিটন, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহতথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মো. আলী হাসান, শ্রীবরদী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান রুকন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম মিয়া।
শহীদ সবুজ মিয়া শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের আজহার আলী (৫০) ও সমেজা খাতুন (৩৮) দম্পতির ছেলে। তিনি চলতি বছর শ্রীবরদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩ (‘এ’ গ্রেড) পেয়ে উত্তীর্ণও হয়েছেন।
শহীদ সবুজের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবুজ মিয়া দ্বিতীয়। বোনের বিয়ের পর বাবা প্যারালাইজড হয়ে পড়েন। এরপর পরিবারের সব দায়িত্ব নেন সবুজ মিয়া। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি ফার্মেসিতে কাজ করতেন। পরিবারের খরচ চালানোর পাশাপাশি নিজের আয়ে পড়াশোনাও করতেন।
মন্তব্য করুন