বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, রাজনীতিতে এক নম্বর স্থানে যাওয়া জামায়াতের লক্ষ্য নয়, দ্বীন বিজয়ই মূল লক্ষ্য। রাজনীতিতে ইতোমধ্যেই নানা পরিসংখ্যানে দেশে জামায়াত এক নম্বর স্থানে আছে বলে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু রাজনীতিতে এক নম্বরে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য নয় বরং ইকামাতে দ্বীনের বিজয়ই আমাদের প্রথম টার্গেট। এজন্য ইসলামের সঠিক দাওয়াত সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইসলামি শক্তিকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে দেখতে চায়। সেজন্য আমাদের প্রতিটি ইউনিট শাখা হবে ইসলাম বিজয়ের দুর্জয় ঘাটি।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের শ্যামপুর-কদমতলী জোনের উদ্যোগে আয়োজিত ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, রাসুল (সা.) সোনার মদিনা রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেই কেবল বসে থাকেননি। তিনি স্বয়ং মাঠে কর্মে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আল্লাহতাআলা শুধু দোয়া মোনাজাত করেই বসে থাকার ওপরে ফলাফল প্রদান করেন না। কর্মে নিয়োজিত হওয়ার পরে বিজয় ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ব্যক্তিকে পৌঁছে দেওয়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সুন্নাহ। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র জনতা কেবল স্বপ্ন দেখেই বসে থাকেনি। ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে। দেশের প্রয়োজনে যেকোনো পরিস্থিতিতে এই ছাত্র জনতা সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও জোন পরিচালক সৈয়দ জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ কবিরুল ইসলাম, আবদুর রব ফারুকী, আতিকুর রহমান চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার জসিম উদ্দিন, খন্দকার এমদাদুল হক, মাওলানা নেছার উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ যাকীর হুসাইন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীল হিসেবে আমাদেরকে আনুগত্যের সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করতে হবে। যেকোনো কঠিন পরিস্থিতেও ইকামাতে দ্বীনের কাজে সক্রিয় থেকে ইসলামের বিজয়কে ত্বরান্বিত করতে হবে। আমাদেরকে কৌশল ও বিনয়ের মাধ্যমে সকল স্থানে সংগঠনকে তুলে ধরতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের প্রথম স্তর ইউনিট দায়িত্বশীলরা নিজেদের মাঝে কোনো ক্ষোভ বা অভিমান রাখার কোনো সুযোগ আপনাদের নেই। আপনাদের মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে এদেশের মানুষের প্রকৃত মুক্তির জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, একজন ইমানদার হিসেবে দুনিয়ার সুযোগ সুবিধা আমাদের জন্য অগ্রগণ্য না। আমাদের মূল টার্গেট হবে আখেরাতে চূড়ান্ত সফলতা। আল্লাহর দেওয়া বিধানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যতো মজবুত হবে এদেশে ইকামতে দ্বীন বিজয়ের কাজ ততো সহজ হয়ে উঠবে। ইসলামী আন্দোলনকে বিজয়ী করতে আমাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রেও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। দ্বীনের বিজয়ের জন্য আমাদের দাওয়াতি কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের কাছে ইসলামী আন্দোলনের সঠিক আহ্বান পৌঁছিয়ে দিতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, মূল সংগঠনকে শক্তিশালী করতে ইউনিট কার্যক্রমকে সচল রাখতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের ইউনিট পর্যায়ের দায়িত্বশীল হিসেবে প্রথম নিজেদেরকে জান্নাতের উপযোগী করার পাশাপাশি এদেশে ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য আল্লাহর শর্ত গুলো পূরণে আমাকে ব্যাকুল থাকতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী ও বিজয়ী আন্দোলনে পরিণত করতে নিজেদের গণমুখি চরিত্রকে উদ্ভাসিত করতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে ইসলামী আন্দোলনের মজবুত ঘাটি হিসেবে পরিণত করতে সমাজের সকল শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। নিজেদের পরিশুদ্ধ করে জান-মালের কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
মন্তব্য করুন