ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগকে ‘জনগণের সাথে প্রতারণা’র শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি মনে করে এটা (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) নাম পরিবর্তন করে নিবর্তনমূলক আইন প্রনয়ন করার নামান্তর। তারা এটার নাম পরিবর্তন করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা আবারও বলছি, আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সম্পূর্ণ বাতিল চাই। এটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে আইন, মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে আইন, মিডিয়ার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে আইন… এটা রাখার কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।
আরও পড়ুন : ‘নতুন মোড়কে পুরোনো জিনিস’ হলে এই আইন গ্রহণযোগ্য হবে না : সাইফুল হক
মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো হচ্ছে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা ও বিদেশিদের একটা প্রচণ্ড চাপ আছে, আন্তর্জাতিকভাবে চাপ আছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে… তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করা আরকি। এটা হচ্ছে, খুব ঝড়ের মধ্যে একটা উট পাখি মাথা গুঁজে থাকে..। ওরা ভাবছে এভাবে মানুষকে বোকা বানিয়ে খুব বুদ্ধিমানের কাজ করছে। তারা মানুষকে বোকা ভাবে। এটা কিন্তু ঠিক না। এটাতে প্রমাণিত হচ্ছে যে, তাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে একই কায়দায় তারা করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের পুরো বিষয়টা আমরা এখনও পাইনি। আমরা দেখতে চাই যে, কি এসেছে তা দেখে গণমাধ্যমে সামনে পরবর্তীতে কথা বলব। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। আমাদের কথা খুব স্পষ্ট, আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পুরোপুরি বাতিল চেয়েছি। এটা নিয়ে কথা বলেছি, বাতিলে দাবি জানিয়েছি, সেমিনার করেছি। এই আইনটা সবচাইতে নিকৃষ্ট কালো আইন স্বাধীনতার জন্যে, গণতন্ত্রের জন্যে। এই আইন কোনো মতেই থাকা উচিত না, আমরা বাতিল চাই।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নাম পরিবর্তন করে সাইবার সিকিউরিপটি অ্যাক্ট নামকরণে নতুন আইনের খসড়া অনুমোদন দেয়। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাস হয়েছিল। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ব্যাপক সমালোচিত ৫৭ সহ কয়েকটি ধারা বাতিল করে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হলেও পুরনো আইনের বাতিল হওয়া ধারাগুলো নতুন আইনে রেখে দেওয়ায় এর অপপ্রয়োগের শঙ্কা ছিল উদ্বেগের কেন্দ্রে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালে কারাগারে মারা যাওয়ার পর ওই আইন বাতিলের দাবিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছিল।
মন্তব্য করুন