বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেছেন,গত ১৭ বছরে আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। তাদের সেই শিক্ষাব্যবস্থার পাঠ্য পুস্তকে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে আমাদের বাচ্চাদের পড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও আমাদের ভাইবোনদের দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য, জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য, বাংলাদেশের মাটিতে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জীবন দিতে হয়েছে। আজকে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে এসেও আমরা বাংলাদেশের প্রকৃত সঠিক ইতিহাস বই প্রস্তকের মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এখনো শিখাতে পারিনি।
শনিবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে পল্লবীর ২ নম্বর ওয়ার্ড লালডেক ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমিনুল হক এসব কথা বলেন। পল্লবী-রূপনগর থানা এলাকার স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম-খতিবদের সাথে এ মতবিনিময় সভা করেন তিনি।
আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের শাসনামলে স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাদের কোন দাবি নিয়ে যখন রাজপথে আন্দোলন করেছে- তখনই শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। তাদের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মামলা হামলা ও নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়েছে। স্বৈরাচার সরকার তখন বলছে- শিক্ষকরা কী এমন কষ্ট করে, তাদের বেতন বাড়াতে হবে? এই বিষয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন যদি আমাদের সুযোগ করে দেয়,তাহলে শিক্ষকদের বেতনসহ সকল সমস্যার সমাধান করে দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ ।
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত ১৭ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম এবং জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার গণআন্দোলনে আমাদের বহু ছাত্র ও জনতা এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন ভাবে স্বাধীন হয়েছি। এখন অন্তবর্তী সরকারের কাছে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, তারা (জনগণ) গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারে নাই। জনগণ এখন ভোট দিতে চায়। তাই দ্রুত সময়ের ভিতরে একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিন, জনগণের ভোটেই দেশে একটা নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের শাসনামলে দেশের সকল স্কুল-কলেজ-মসজিদ মাদ্রাসায় দলীয় করণ করা হয়েছে ; কিন্তু আমারা তা চাই না। আমরা চাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে যারা জড়িত-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রুলস অনুযায়ী কার্যক্রমে শিক্ষক,কর্মকর্তা, কর্মচারী, অভিভাবক প্রতিনিধি দিয়েই চলবে। এখানে কোন দলীয়করণ করা যাবে না। কারণ গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যা করেছে, আমরা সে ভুল করতে চাই না।
আমিনুল হক এ সময় আওয়ামী সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রতি জোর আহবান জানিয়ে বলেন, এদেশের জনগণ আপনাদের সমর্থন দিয়েছে এবং আমরাও আমাদের জায়গা থেকে আপনাদের সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়েছি এবং দিচ্ছি। আমরা আশা করবো আপনারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসবেন।
সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন এর সভাপতিত্বে ও পল্লবী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক কামাল হুসাইন খান ও যুগ্ম আহবায়ক মুকছেদুর রহমান আবীর এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, মিরপুর গালর্স আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তারি আহমেদ, ড. মো. শহীদুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. খালেকুজ্জামান, শহীদ আবু তালেব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম বোরহান উদ্দিন, মিরপুর ১১ নম্বর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুল বাতেন,মিরপুর ৬ নম্বর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও মাদ্রাসার খতিব ও মোহতামিম মাওলানা আব্দুল কবির কাসেমী, দারুল বাসাদ মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মুফতি আব্দুল হালিম, জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুস সালাম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি সাইফুজ্জামানসহ প্রমুখ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর এর সাবেক সদস্য এবিএমএ রাজ্জাক,স্বেচ্ছাসেবকদল ঢাকা মহানগর উত্তর এর সাধারণ সম্পাদক মহসিন সিদ্দিকী রনি, মহিলাদল নেত্রী লাইলী বেগম, পল্লবী থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ আলী গাজী, যুগ্ম আহবায়ক আনিছুর রহমান, মোতালেব হোসেন হাওলাদার,রুপনগর থানা বিএনপির আহবায়ক জহিরুল হক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ইন্জি. মজিবুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমেদ রাজু, যুবদল পল্লবী থানার সভাপতি যুবনেতা হাজি নূর সালাম,সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, ২নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো. মামুনসহ প্রমুখ।
এরপর বিকেলে রূপনগরে হিন্দুদের শ্রী শ্রী গোবর্ধন পূজা ও অন্নকূট মহোৎসব পরিদর্শন করেন তিনি।
মন্তব্য করুন