বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসব-উত্তর শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।
তারেক রহমান বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ আর হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ’২৪ সালের দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ সব ক্ষেত্রেই গণতন্ত্রকামী জনগণ বিজয়ী হয়েছে। সুতরাং হাজার হাজার আহত মানুষের আত্মচিৎকার, হাজারো লাখো শহীদের রক্তস্নাত জমিনের আমাদের মধ্যে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে যে কোনো মূল্যে আমাদের সেই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা গেলে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করে আর কেউ আমাদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সক্ষম হবে না ইনশাআল্লাহ। আমি বলতে চাই, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমাদের একটিই বার্তা… বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী কিংবা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এই বাংলাদেশ আপনার-আামার আমাদের সবার। তথাকথিত সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু নয়, এই জাতি রাষ্ট্রের আমাদের একটাই গর্তি পরিচয় আমরা সকলে বাংলাদেশি।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনার যতটুকু অধিকার আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। আমাদের সবার কাছে সবার আগে বাংলাদেশের স্বার্থই হবে সবচাইতে বড়। রাষ্ট্র-রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেবো মেরিটোক্রেসিকে। এদেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এই বিএনপির নীতি এটাই বিএনপির রাজনীতি।
সকলকে নিজেদের অধিকার আদায় এবং দায়িত্ব কর্তব্য পালনে সর্তক থাকার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
১৫ বছরে ‘মাফিয়া সরকারের’ শাসনামলে হিন্দুসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর অন্যায়-অত্যাচারের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ভবিষ্যতে যাতে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ ধর্মীয় রীতিনীতি নিশ্চিন্তে নিরাপদে উদযাপন করতে পারেন তেমন একটা রাষ্ট্র এবং সমাজ বিনির্মাণের জন্যই বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি আজ ঐক্যবদ্ধ। সকলের উদ্দেশ্যে আমাদের বার্তা একটিই… ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার। সুতরাং আপনাদের প্রতি বিনীত আহ্বান, পলাতক স্বৈরাচারের পৃষ্ঠপোষক এবং তাদের দোসরদের কোনো উসকানিতে দয়া করে পা দেবেন না, কোনো গুজব, গুঞ্জনে দয়া করে কান দেবেন না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু‘র সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আফরোজা খানম রীতা, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম জামাল, জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, অপর্না রায় দাস, সুশীল বড়ুয়া, রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, তুরন দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মহাসচিব এস এন তরুণ দে, উপদেষ্টা অ্যালবার্ট পি কষ্টা, মনি স্বপন দেওয়ান, অধ্যক্ষ গণেশ হাওলাদার, ভাইস চেয়ারম্যান অর্পনা রায় দাস, নিতাই চন্দ্র ঘোষ, দেবাশীষ রায় মধুসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন