জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘যেসব সংস্কার জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে হবে, সেগুলো সংস্কার করতে পারে। প্রত্যেকটি বিষয়ে ঐক্যমত সৃষ্টি করতে হবে।’
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৮০ দিন : গতিমুখ ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় আমীর খসরু এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, প্রায় ৬ বছর আগে ‘ভিশন-২০৩০’-এ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংস্কারের কথা বলেছেন। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গত বছর ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছে। আলোচনা সভা, সেমিনার, লিফলেট বিতরণ করেছি। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। আজকের প্রেক্ষাপটে কী মৌলিক সংস্কার করব, কীভাবে করব- সে প্রশ্ন আসে। যেসব সংস্কার জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে হবে, সেগুলো সংস্কার করতে পারে। যে সংস্কারে জনগণ ঐক্যমত হবে না, সব রাজনৈতিক দল একমত হবে না, সেগুলো পরবর্তী সরকারের জন্য রেখে দিতে হবে। জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যমতে বিশ্বাসী হতে হবে। প্রত্যেকটি বিষয়ে ঐক্যমত সৃষ্টি করতে হবে। বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে কারও দ্বিমত নেই।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে বহু লোক জীবন দিয়েছেন, চাকরি হারিয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সরকারিভাবে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদীদের দোসররা ফিরে আসার জন্য ঘোরাঘুরি করছে।
আমীর খসরু বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছি। বাংলাদেশের নাগরিকদের মনোজগতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সবার মধ্যে আশা ও আকাঙ্ক্ষা জেগেছে। একটা ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সবাই সরকারকে সমর্থন দিয়েছে।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, গত ১৬ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি বলেই শেখ হাসিনার মতো দানবীয় শক্তির উত্থান হয়েছে। জনগণের মালিকানার প্রধান বাহক হচ্ছে, নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। জনগণের সবচেয়ে বড় ঐক্য, তারা ভোট দিতে চায়। ৩৫ বছরের নিচে কেউ এখনো ভোট দিতে পারেননি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের জন্য ১০টা কমিশন গঠন করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন নতুন দাবি উপস্থাপন করছে। তাদের দাবির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার বা কমিশনের দাবি এক কিনা- তা আমরা জানি না। এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। কারণ এ দাবিগুলো সংস্কারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সদস্য আকবর খানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ প্রমুখ নেতা।
মন্তব্য করুন