গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতিত সরকারের পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করা না করার প্রশ্নটাই অবান্তর। এটা নিয়ে রাষ্ট্রপতির পানি ঘোলা করার কোনো সুযোগ নেই।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব এক সমাবেশে মঞ্চের নেতারা এ কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় নেতারা সরকারকে তাদের কাজের অগ্রাধিকার নির্দিষ্ট করে জাতীয় নির্বাচনসহ গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পদক্ষেপগুলো দেশবাসীর কাছে হাজির করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ, ৭ মার্চ, ২ মার্চসহ ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবসের মতো সর্বজনগৃহীত দিবসগুলো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি না করার পরামর্শ দেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে এবং দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ বিষয়ক সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া প্রমুখ।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এই সরকারকে অনতিবিলম্বে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবি জানান। তারা বলেন, মুনাফাখোর সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নেতারা বাজারের আগুনে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষের দুর্গতি কমাতে আগামী ছয় মাস পরিবারপ্রতি নগদ আর্থিক সহযোগিতা করার দাবি জানান। তারা বলেন, অভাবী ও অভুক্ত মানুষ সংস্কারের ভালো কোনো প্রস্তাবকেও গ্রহণ করতে পারবে না। তারা আরও বলেন, সরকারকে ব্যর্থ ও অকার্যকর করতে যেসব ষড়যন্ত্র ও অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা চলছে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নেতারা ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করেন, ক্ষমতা গ্রহণের আড়াই মাস পর মানুষ এখন সরকারের সাফল্য দেখতে চায়। প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারকেও পুনর্গঠন করুন। এখন সরকারের কোনো অজুহাত মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা গণহত্যা, বেশুমার লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত পতিত সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে হত্যা মামলার আসামি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তীতেও এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা চলতে থাকলে প্রকৃত আসামিরা পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে এবং মামলার মেরিট কমে যাবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মুসতাক, ভাসানি অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিম, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক মোহিতুজ্জামান মুহিত প্রমুখ নেতারা।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মন্তব্য করুন