ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৪ আসনে হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রিন্সিপাল মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য তুলে ধরে ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব নিয়ে নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর জুরাইনের বেল্লা পাস্তা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ঢাকা-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সর্বস্তরের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঘুরে ফিরে যেন চাঁদাবাজরা পুনর্বাসিত হতে না পারে সেদিকে ভোটারদের সকর্ত করে গড়ে তোলার কাজ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের দোসরকে ক্ষমতায় কোনোভাবেই আসতে দেওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, যারা ৫ আগস্টের পর জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছে, মিল-ফ্যাক্টরিতে ডাকাতি করেছে, চাঁদাবাজি চালাচ্ছে তাদের বিষয়ে জনগণকে সঠিক ম্যাসেজ দিতে হবে। জনগণ পরিবর্তন চায়, শান্তি ও কল্যাণ চায়। জনগণকে শান্তি ও কল্যাণের পথ দেখাতে হবে। ইসলামী আন্দোলনকে জনগণের সংগঠনে পরিণত করতে হবে।
প্রিন্সিপাল মাদানী বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এটাকে অর্থবহ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা যেন কোনো চক্রান্ত করে দেশকে অকার্যকর দেশে পরিণত না করতে পারে, সে দিকে সকলকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, নগর দক্ষিণ সহসভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সেক্রেটারি ডা. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম।
ঢাকা- ৪ নির্বাচনী এলাকার প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এবং শ্যামপুর থানা সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোশারেফ হোসেন ও কদমতলী থানা সেক্রেটারি মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এম হাছিব আর রহমান, কদমতলী থানা সভাপতি মাওলানা ক্বারি মাসুদুর রহমান, শ্যামপুর থানা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব বেলাল হোসেন আরিফ, আলহাজ মোতাহার হোসেন, মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, সুলতান আহমদ খান প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যেক ভোটারের ভোটের মূল্যায়ন হয়। নির্বাচনে যে দল মোট প্রদত্ত ভোটের যত শতাংশ পাবে, সেই অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে। বিশ্বের অনেক দেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করছে। অনেক আগেই আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি দীর্ঘদিন থেকে। বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি নিয়ে মাঠে কাজ করছে।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে করলে ছোট দলগুলো আর বৈষম্যের শিকার হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে মনোনয়ন বাণিজ্য ও দুর্নীতিও থাকবে না। প্রতিটি ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে। মানুষের ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হলে দেশ গড়ায় তারা আরও উৎসাহিত হবে।
মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, যানজটমুক্ত নিরাপদ শহর জনগণের প্রত্যাশা। এ জন্য হকারমুক্ত ফুটপাত চাই। হকারদের ভিন্ন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। হকারমুক্ত ফুটপাত করে জনগণকে স্বস্তিতে চলাচলের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার গড়ে তুলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে জনগণ দিশাহারা। এ কাজগুলো দ্রুত করতে হবে।
মন্তব্য করুন