ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া জাতীয় দিবসসমূহের সঙ্গে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ বাতিলে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, অপরাপর জাতীয় দিবসের সঙ্গে ৭ মার্চকে একাকার করে দেখা বিবেচনাপ্রসূত নয়। তা ছাড়া ৭ মার্চে সরকারি কোনো ছুটিও ছিল না।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য জাতীয় দিবসের সঙ্গে ৭ মার্চ বাতিলের সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে এবং সরকারকে অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের মধ্যে ঠেলে দেবে।
এ ছাড়া তিনি বলেন, বিশেষ পরিবারকেন্দ্রিক কয়েকটি দিবসের সঙ্গে ৭ মার্চকে গুলিয়ে ফেলার কোনো অবকাশ নেই। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন ও তাদের গণহত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ ও ৭ মার্চকে সম্পর্কিত করে দেখারও কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া তিনি বলেন, ১৯৭১ এর অগ্নিঝরা উত্তাল সময়ে ৭ মার্চের ভাষণ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। যা মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, জনগণকে রাজনৈতিক দিশা দিয়েছিল।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবেদনশীল ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক অবস্থান ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দেশের যে মানুষ, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক অংশসমূহ অন্তর্বর্তী সরকারকে এককাট্টা সমর্থন জুগিয়ে আসছে তাদের মনোভাব, আকাঙ্ক্ষা ও আবেগ বিবেচনায় নেওয়া দরকার। পাশাপাশি তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান যে অসাধারণ গণঐক্য তৈরি করেছে এবং নতুন এক অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার অসীম সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে, রাজনৈতিক ইতিহাসের ভুল ও পক্ষপাতদুষ্ট ব্যাখ্যায় তা নষ্ট করা আত্মঘাতী হতে পারে।
বিবৃতিতে সাইফুল হক আরও বলেন, আমাদের ইতিহাসের যেমন অনেক অসাধারণ গৌরবজনক উত্তরাধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে অনেক নির্মম নেতিবাচক উত্তরাধিকারও। সবটাই আবার ইতিহাসের অংশ। ইতিহাসের নির্মোহ পর্যালোচনার ভিত্তিতেই স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র হিসেবে গণতান্ত্রিক ধারায় বাংলাদেশকে তার আগামীর পথ চলা নিশ্চিত করতে হবে।
মন্তব্য করুন