জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) একটি অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৯৯ সালের ১৮ অক্টোবর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষার লক্ষে জেডআরএফ প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ১৮৬০ সালের সোসাইটি অ্যাক্ট দ্বারা নিবন্ধিত একটি অরাজনৈতিক, বেসরকারি ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান।
‘একটি উদ্যোগ, একটু চেষ্টা এনে দেবে সচ্ছলতা, দেশে আসবে স্বনির্ভরতা’ এই স্লোগানকে ধারণ করেই গরিব এবং অসহায় মানুষের মাঝে ছুটে চলেছে জেডআরএফ। ইতোমধ্যে মানবসেবার অসংখ্য দৃষ্টান্তমূলক কাজের মাধ্যমে সারা দেশে ব্যাপক পরিচিতি ও সুনাম লাভ করেছে সংগঠনটি। হাসি ফুটেছে অসংখ্য অসহায় পরিবারে। দেখতে দেখতে সময়ের পরিক্রমায় ১৮ অক্টোবর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা রজতজয়ন্তী উদযপান করবে জেডআরএফ। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকীকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান কে সদস্য সচিব করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটি-২০২৪ গঠন করা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এছাড়া শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখবেন। এছাড়া বিশেষ ক্রোড়পত্র এবং বই প্রকাশ করা হবে।
তারেক রহমান জেডআরএফের প্রেসিডেন্ট এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক। জেডআরএফের মাধ্যমে শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের একই ছাতার নিচে এনেছেন তারেক রহমান। তিনি তার পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর মতোই বিশ্বাস করেন যে, দেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করতে না পারলে মানুষের মুক্তি নেই। সে লক্ষ্যেই তিনি জেডআরএফ প্রতিষ্ঠা করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেডআরএফ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গরিব ও দুস্থ রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে আসছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করতে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও সেলাই মেশিন বিতরণ, বহু চিকিৎসা ও সেবাদান কেন্দ্র স্থাপন, শীতবস্ত্র বিতরণ, সামাজিক বনায়ন, শস্যবীজ সরবরাহ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ পুনর্বাসন, শিক্ষা বৃত্তি প্রকল্প ও ভার্চুয়াল বিজ্ঞান মেলার আয়োজনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত ও প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। বিশেষ করে দেশে যখনই কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে তখনই জেডআরএফ তার সাধ্যমতো মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করেছে।
অতিসম্প্রতি ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পসহ ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এর আগে করোনাকালে মানবসেবার অংশ হিসেবে সচেনতামূলক লিফলেট বিতরণ, সার্বক্ষণিক জরুরি হটলাইন চালু, দেশের সকল বেসরকারি হাসপাতালে পিপিই ও ফেসবুকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন, করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে জীনাণুনাশক ছিটানো, গরিবদের মাঝে খাদ্য বিতরণ, টেলিমেডিসিন সেবা, হোম হেলথ সার্ভিস কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
বিভিন্ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে জেডআরএফ’র প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান সবসময় পাশে ছিলেন। তার নির্দেশে জেডআরএফ সম্প্রতি মহামারী করোনার সংকটেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। জেডআরএফের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে জেডআরএফের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন ফরহাদ হালিম ডোনার।
জেডআরএফকে বিভিন্ন সংকটে হতাশার সাগরে ছুটে চলা মানবতার বিশাল রণতরী আখ্যা দিয়ে রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সংকটকালে দেশে মানবসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে জেডআরএফ। যার সুফল ভোগ করছে দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ। বিশেষ করে ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের নির্দেশে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু হতেই দুস্থ, অসহায়, গরিব ও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পাশাপাশি বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারসহ মাত্র ২২ জন তরুণ চিকিৎসককে সাথে নিয়ে পথচলা শুরু। আজ সময়ের পরিক্রমায় জেডআরএফ যেন বিশাল বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অসংখ্য উদ্যমী মানুষ। বটবৃক্ষের সুশীতল ছায়ায় যেমন মানুষ নিজেকে প্রশান্ত করতে পারে। তেমনই জেডআরএফের নানামুখী সামাজিক প্রকল্প এবং সহায়তার মাধ্যমে দেশের অসংখ্য গরিব সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। এর নেপথ্যে থেকে যিনি কাজ করছেন তিনি হলেন ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান।
মন্তব্য করুন