গণহত্যাকারী, হত্যার নিদের্শদাতা, হত্যাকাণ্ড চালাতে সহায়তা করা, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের দোসরদের আটক করেই জামিন দেওয়া জনগণের সঙ্গে তামাশার শামিল। এ মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর শান্তিপুর কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খিলগাঁও জোনের ইউনিট সভাপতি-সেক্রেটারি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
খিলগাঁও জোন পরিচালক মাওলানা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও খিলগাঁও-মুগদা থানা আমির মাহমুদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ড. মাসুদ আরও বলেন, অপরাধীদের আটক করেই জামিন দিয়ে দেওয়া কখনো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা নয়।
কার স্বার্থে বা কোন স্বার্থে আটকের পরই জামিন হচ্ছে- তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে বেইমানি করলে, জামায়াত-শিবির লাগবে না আদালত পাড়ায় শহীদ ও আহত বহু পরিবার রয়েছে তারাই বাধ্য হবে গণহত্যাকারী, হত্যার নির্দেশদাতা, হত্যাকাণ্ড চালাতে সহায়তা করা, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের দোসরদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠাতে।
পাশাপাশি তিনি বলেন, অতীতে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে যতদিন রিমান্ডে রাখা হয়েছে ততদিন আওয়ামী লীগের নেতাদের কারাগারেও রাখা হচ্ছে না। এই বৈষম্য কেন প্রশ্ন রেখে ড. মাসুদ বলেন, আমরাও চাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হোক। জামিনযোগ্য মামলায় জামিন লাভ করুক। কিন্তু আটক করেই জামিন চাওয়া মাত্র জামিন! এটা কখনো ন্যায়বিচার হতে পারে না। এটা কেবলই একটি দল বা গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া।
এর আগে শুক্রবার সকালে সবুজবাগ পূর্ব থানা আমির মো. রওশন জামানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ফাইজুর রহমানের সঞ্চলনায় সবুজবাগ পূর্ব থানা কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশে স্থায়ী শান্তির জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। মানুষের তৈরি তন্ত্রমন্ত্রে রচিত সংবিধান শুধু ক্ষমতাসীনদের জন্য রচিত হয়, দেশের নাগরিকদের জন্য নয়। মানুষের তৈরি মতবাদে সমাজে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবেও না। সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত সংস্কার কমিশনকে কুরআন অনুসরণ করে সংস্কার করতে হবে। নয়তো দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে না। আবারও অতীতের লুটপাটকারী, দুর্নীতিবাজ, দখলবাজদের হাতে বাংলাদেশ চলে যাবে। যাদের তারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি তাদের আর দেশের নেতৃত্বে আনা যাবে না, আসতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, সেজন্যই জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী চায় দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক। ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হোক। এজন্য জামায়াতে ইসলামী নিজেদের দলগত চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করবে না। জাতি ও দেশের স্বার্থের হিসাবই করবে জামায়াতে ইসলামী।
ড. মাসুদ উপস্থিত কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, একটি দলের প্রাণ হচ্ছে কর্মী। কর্মীদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার, মূল্যবোধ, মানবিকতা, নৈতিকতা ও আদর্শ সৃষ্টি হয় নেতাদের থেকে। কিন্তু যে দলের প্রধানসহ নেতারা চোর, খুনি, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, দখলদার সেই দলের কর্মীও ঠিক নেতার মতোই হয় এবং হবে।
এ ছাড়া তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতারা চুরি করে না, লুটপাট করে না, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, দখলদারিত্ব করে না। যার ফলে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরাও নেতাদের মতোই মানবিক, নৈতিকতা সম্পন্ন ও আদর্শবান হয়ে থাকে। জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অন্যতম কর্মসূচি হচ্ছে- নাগরিকদের আদর্শ মানুষ হিসেবে তৈরি করা। কারণ এই নাগরিক থেকেই নেতা তৈরি হবে, দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিবে।
তা ছাড়া তিনি বলেন, জনগণের জান-মালের পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে কেবল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এটি দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে ভালো বুঝে এবং জানে ও বিশ্বাস করে। সেজন্যই তারা চায় না ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক, জামায়াতে ইসলামী দেশ পরিচালনা করুক। কারণ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে তারা আর অপকর্ম করতে পারবে না। এজন্যই তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তাদের সব অপপ্রচার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতেও রুখে দিতে তিনি উপস্থিত কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন