ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর দেশছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন জয়নুল আবদিন ফারুক।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘হুট করে দেশে চলে আসবেন? টেলিফোনে কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, এত সহজ নয়। চুরি করে পালাতে পারেন ভারতে, এখন আওয়ামী লীগের বিজিবি নয়, এখন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারের বিজিবি।’
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘বর্ডার খুব শক্ত। যারা গেছেন তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে সরকারকে। কী করে গেল, কেমন করে গেল, যারা বাংলাদেশে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। তারা কী করে হিন্দুস্তানে পালিয়ে যায়, সেই শ্বেতপত্র সরকারকে প্রকাশ করতে হবে।’
ভারতের উদ্দেশে সাবেক বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জোরালো ভাষায় বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ গরিব হতে পারে, বাংলাদেশের মানুষের মন বড়, কলিজা অনেক বড়। আপনারা (ভারত) একাত্তর সালে আশ্রয় দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে পিণ্ডির জিঞ্জির থেকে দিল্লির জিঞ্জিরে আমাদেরকে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনাকে দিয়ে।’
‘বাংলাদেশের মানুষ বছরের পর বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়েছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, দিনের ভোট আর রাতে দেব না, এই আন্দোলন কোনোভাবে বৃথা যাবে না।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেকে রহমানসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করা হয় এই সমাবেশে।
ফারুক বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার এ জন্য এসেছে সংবিধানমতো দেশ চলবে, এই সরকার এ জন্য এসেছে আওয়ামী লীগের মতো, ছাত্রলীগ-যুবলীগের মতো ৩ লাখ থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে কোনো দিনই সরকার বাংলাদেশে পরিচালিত হতে দেবে না।
আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, আমি এমন একটি নির্বাচন চাই, এমন একটি ভোট চাই যে ভোটে জনগণ এক মাথায় এক ভোট দিতে পারে, মৃত ব্যক্তি আর করব থেকে উঠে যেন আর ভোট না দিতে পারে। সে জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা, আপনার কাছে জনগণের আশা, আপনার কাছে আমাদের আশা, আপনার কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের আশা আপনি সেই আশা পূরণ করবেন। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন।’
বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে দায়েরকৃত ৪০ লাখ মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান ফারুক।
তিনি বলেন, ৪০ লাখ মামলা দায়ের করা হয়েছে আমাদের বিরুদ্ধে। আমার বিরুদ্ধে ৮৪টি মামলা। আমার বাড়ি থেকে আমার ছোট্ট নাতনি যখন তিন মাস বয়স সেই কাঁদতেছে তখন আমার বাড়ির দরজা ভেঙে হারুন (ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ) তুলে নিয়ে যায়। এই কথাগুলো কি আমাদের মনে আছে? তাই ৪০ লাখ মামলা কেন এখনো রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে প্রত্যাহার করা হচ্ছে না জনগণ বলা শুরু করেছে। আর নয় ২০১৪ সাল, আর নয় ২০১৮, আর নয় ২০২৪ সাল। এবার চাই অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন।
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এসএম শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আবু তাহের, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, বিএনপির শাহ মো. নেছারুল হক, আনোয়ার হোসেন বুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন