বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৪ পিএম
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচনমুখী সংস্কারগুলো আগে করতে হবে : সালাহউদ্দিন

বৃহস্পতিবার দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় অতিথিরা। ছবি : কালবেলা
বৃহস্পতিবার দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় অতিথিরা। ছবি : কালবেলা

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কারগুলো আগে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৯০ এর জেহাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।

এর আগে সকালে রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে শহীদ জেহাদের স্মৃতিস্তম্ভে বিএনপির পক্ষ থেকে ১৯৯০-এর ছাত্রনেতা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিমউদ্দিন আলমসহ নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

আলোচনা সভায় রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আপনি অবশ্যই সংস্কার করবেন, আমরাও সংস্কার চাই। এ জন্য আমরা ছয়টি ছায়া সংস্কার কমিটি গঠন করেছি। আমরাও সরকারের সংস্কার কমিশনের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেব। এর মধ্যে যেগুলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য জরুরি- সেগুলো আগে সংক্ষিপ্ত মেয়াদে বাস্তবায়ন করবেন। মধ্যমেয়াদে সংস্কার আছে, দীর্ঘমেয়াদে সংস্কার আছে। কমিশন সংবিধানের জন্য যা সিলেক্ট করবে, তা সবার সাথে আলোচনা করে করবে। সেজন্য একটি নির্বাচিত সংসদ লাগবে।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লব’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচাররা কিছুদিন পর দেশে দেশে প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখে। তারা আবার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার দুঃস্বপ্ন দেখে। শেখ হাসিনাও তার ব্যক্তিক্রম নয়। প্রতিবেশি দেশে বসে বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। সেই প্রয়াসে শামিল হচ্ছে এই দেশে ফ্যাসিবাদের দোসররা, যারা সরকারের বিভিন্ন অঙ্গসহ নানা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত আছে। তারা সাংবিধানিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তিনি আরও বলেন, সংবিধান যারা ভালো জানেন ও বুঝেন - যখন সংবিধানে কোনো কিছু স্পষ্ট উল্লেখ থাকে না, তখন প্রভিশন অনুসারে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির কাছে রেফারেন্স পাঠান। প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের সমস্ত বিচারকরা সেই রেফারেন্সই পেয়েছিল রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে। ওনারা সর্বসম্মতিক্রমে মতামত দিয়েছেন আপনি (রাষ্ট্রপতি) অন্তর্বর্তী সরকারের শপথগ্রহণ করাতে পারেন। সেটা পরবর্তী সংসদে পাস হতে হবে; গণতান্ত্রিক সংগ্রামে থাকা সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল যার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে সংবিধান আর যেখানে যা কিছুই থাকুক না কেন- সেটা আপাতত ইনেক্টিভ থাকবে।

বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, অনেকে সংবিধানের ৫৭(৩) আর্টিক্যালের কথা বলেন, আরও অনেকে অনেক কথা বলতে পারেন। শেখ হাসিনাও বলতে পারেন যে, তিনি এখনো দেশের প্রধানমন্ত্রী- যা হাস্যকর। যাদের মধ্যে এখনো বিভ্রান্তি আছে তাদের বলব, পরবর্তী যে রাজনৈতিক দল সরকার সংসদ গঠন করবে তারা সংবিধান সংস্কারের মধ্যদিয়ে রেটিফিক্যাশন করবে-এটি স্যাটেল্ড।

গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ছাত্রদল নেতা রমজান আলী জীবন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (৯ অক্টোবর) মারা যান উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই নিয়ে ১৫শ’ ৮৩ জন শহীদ হয়েছেন। তাদের স্বপ্ন ছিল দেশের মানুষের সবার সমান অধিকার থাকবে। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা সংস্কার ও নির্বাচন- এই নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছি, বৈঠক করেছি। তাকে বলেছি- আপনি রোডম্যাপ ঘোষণা করেন, কবে নির্বাচন দিতে পারবেন, কবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাব- দেশের মানুষ এই জাতীয় ইশারা পেতে চায়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন বলেই মনে করবেন না যেসব স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদের দোসররা পালিয়ে গেছে। তারা আছে- নানা রকম গুজব ছড়ানোর, বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। আপনাদের হুঁশিয়ার থাকতে হবে, সাবধান থাকতে হবে। কোনো রকমের গুজব-বিভ্রান্তিতে যেন আমরা পা না দেই।

তিনি আরও বলেন, দুর্গোৎসব চলছে। সেখানে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়- সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদেরও আছে। কারণ, কিছু মানুষ আছে যারা চক্রান্ত করে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আমাদের দেশের বদনাম করার চেষ্টা করবে। এই সরকার কিংবা যারা এই সরকারকে নিয়ে এসেছে তাদেরকে হেয় করার চেষ্টা করবে। এটা যাতে করতে না পারে- সেই নজর আমাদের রাখতে হবে।

১৯৯০’র ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং এজিএস নাজিম উদ্দিন আলমের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন- নব্বইয়ের ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মীর সরফত আলী সপু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও শহীদ জেহাদের বড় বোন চামেলী মাহমুদ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের পূর্ণ স্বাধীনতা নেই : মার্কিন গবেষণা

লেবানন থেকে ইসরায়েলে ৯০টি রকেট নিক্ষেপ

ইরানে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে ইসরায়েল

অতিরিক্ত ও সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৪৭ কর্মকর্তার পদায়ন

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তারেক রহমান / দেশ ও মানুষের প্রয়োজনে ৩১ দফায় নতুন বিষয় সম্পৃক্ত করা হবে

মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে গোলাগুলি, যুবক নিহত

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি জানালেন ভিপি নূর

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ : এফএএস ফাইন্যান্সের পর্ষদ পুনর্গঠন

অন্তবর্তী সরকারকে সময় দিতে চায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

মিরসরাইয়ে লোকালয় অজগর, বনে অবমুক্ত

১০

ভালুকায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১১

কুড়িগ্রামে নানা আয়োজনে কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১২

আখাউড়ায় কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৩

‘সবার আগে কালবেলার খবর দেখে মানুষ’

১৪

‘কালবেলা সাধারণ মানুষের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে’

১৫

মুন্সীগঞ্জে কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৬

লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতাসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

১৭

সিলেটে বর্ণিল আয়োজনে কালবেলার দ্বিতীয় প্রতিবার্ষিকী উদযাপন

১৮

 ‘ইসলামী রাষ্ট্র বিনির্মাণে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখতে হবে’ 

১৯

বরিশালে উৎসবমুখর পরিবেশে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

২০
X