আওয়ামী লীগের ফিরে আসার সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক অধিকার দিয়ে কেউ যদি মনে করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব আমি তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী একটি শক্তি। জার্মানির নাৎসিদের সঙ্গে তার তুলনা করা যায়।
রোববার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তাদের কোনো স্থান হবে না। কেউ যদি এটা মিলাতে চান তাহলে তারা তাদের মতো করে মিলাতে পারেন। তারা নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত হবেন। আওয়ামী লীগ যে শুধু এক মাসের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল এমন নয়, তারা সুদীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শুরুতে সাড়ে তিন বছরের একটা মর্মান্তিক ইতিহাস আছে। সেখানেও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক সুস্থতার পরিচয় দেয়নি। এ কারণেই বাংলাদেশ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের খুব প্রয়োজন এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। পুলিশ প্রশাসন এবং তাদের কর্মীদের হাতে নির্বিচারে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে পারেনি।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দেশের জনগণ যখন কাউকে প্রত্যাখ্যান করে সে প্রত্যাখ্যান কত নির্মম হয় তা গত দুই মাসে দেশের মানুষ ও বিশ্ববাসী দেখেছে। সে কারণে আগামী দিনে আওয়ামী লীগের ফিরে আসার খুব সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে তত দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, অর্থনীতি ও রাজনীতির জন্য ভালো হবে। যে কোনো কথা বলে কেউ যদি নির্বাচন আড়াল করার চেষ্টা করে বুঝতে হবে সে আর যাই হোক জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না। গত ২০ বছর ধরে এ দেশের মানুষ একটা ভোট দিতে পারেনি। নানা কথা বলে, উন্নয়নের কথা বলে, গণতন্ত্রের তথাকথিত শব্দ উচ্চারণ করে, কেউ ইসলামের কথা বলে মানুষের ভোটাধিকারকে রোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমার দলও মনে করে- মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে গণতন্ত্রের স্বপক্ষে কাজ করা।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্ট করে বলেছেন, বোঝার কোনো অসুবিধা নেই, গণতন্ত্রের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। গণতন্ত্র এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি, গণতন্ত্র তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে যখন নির্বাচন হবে। আর নির্বাচনে কাকে ক্ষমতা আনবেন? আমি, আমার দল এবং এ দেশের গণতন্ত্রকে আমি ও মানুষ মনে করে আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান। তাকে ঠেকানোর জন্য কোর্ট ব্যবহার করা হয়েছে, নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। তাকে ঠেকানোর জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি করা হয়েছে, কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি।
তিনি বলেন, কোনোভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে ঠেকানো বা বিভক্ত করা যাবে না; যে যাই বলুক না কেন- আগামী দিন গণতন্ত্রের দিন, বিএনপির দিন, ধানের শীষের দিন, খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের দিন। এই বিশ্বাসটাকে সামনে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
এতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন