লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রায় দুই মাস সময় পূর্ণ করেছে। এই সরকারের কাছে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেক। তবে এখনো মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ-দুশ্চিন্তাও কাজ করছে। কারণ, সংস্কার কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি আশানুরূপ নয়। শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলডিপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
অলি আহমদ বলেন, কোনো অবস্থাতেই দেশের মানুষকে নিরাশ করা যাবে না। আমাদের সবাইকে সরকারকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে হবে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে এবং সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব প্রয়োজনে দক্ষ, শিক্ষিত এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে উপদেষ্টাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করুন এবং নিয়মিত রাজনীতিতে অভিজ্ঞজনের পরামর্শ নিন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সংস্কারকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। এ ছাড়া প্রত্যেকের মানসিক সংস্কারও প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে মনে হয় যে, তাদের অনেকেই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি দুর্বল। সরকারের কর্মকাণ্ড দেখলে আরও মনে হয়, তারা দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখার পরিকল্পনা করছে। কারণ, প্রায় দুই মাস সময় অতিক্রান্ত করার পরও এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের আদালতগুলিতে স্বৈরাচারী সরকারের নিয়োগ দেওয়া পিপিরা কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়াও আওয়ামীপন্থি বিচারকগণ নিজ নিজ অবস্থানে বহাল তবিয়তে আছেন। ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি বলেন, শতকরা প্রায় ৯৫ শতাংশ সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে শেখ হাসিনার লোটাবাহিনী এখনও পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখল করে রেখেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। সরকারি কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত তাদের চিহ্নিত করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা। বিতর্কিত ব্যক্তিদের পদায়ন বন্ধ করতে হবে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তাদের বরখাস্ত করা দূরে থাক বরং কিছু কিছু নতুন জায়গায় বিতর্কিত ব্যক্তিদের নতুনভাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি তার উদাহরণ।
এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। আমাদের সবাইকে এই অনুষ্ঠান সফলভাবে ও নিরাপত্তার সঙ্গে পালন করার জন্য সহযোগিতা করতে হবে। বিশেষভাবে সরকারকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, আওয়ামীপন্থিরা বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন সময় দাবি করে আসছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যেন তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয়। এলডিপির প্রস্তাব হচ্ছে, তাদের জন্য ন্যূনতম যেন দুদিন ঐচ্ছিক ছুটির ঘোষণা দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন