দীর্ঘ জুলুম-নির্যাতন ও শাহাদাতের পথপরিক্রমায় জামায়াতে ইসলামী গণমানুষের প্রাণপ্রিয় কাফেলায় পরিণত হয়েছে। তাই আমরা জনগণের আস্থার যথাযথ মর্যাদা রক্ষায় সব সময় আপসহীন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর মধ্য থানা আয়োজিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছে। দেশে ফিরে এসেছে ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশ। শতসহস্র প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এ গৌরবের বিজয়। তাই এই বিজয়কে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এই নতুন বিপ্লবকে মানুষের সত্যিকারের মুক্তির বিপ্লব, ভালোবাসার বিপ্লব ও সম্প্রীতির বিপ্লবে পরিণত করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বরং রাষ্ট্রের কার্যকর ও ফলপ্রসূ সংস্কারের মাধ্যমে জাতিকে এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এক্ষেত্রে সব সময়ই আপসহীন।
এ সময় তিনি স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। অন্যথায় ফ্যাসিবাদ ও বাকশালী অপশক্তি আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে।
তিনি আরও বলেন, দেশে দীর্ঘ পরিসরে অপশাসন-দুঃশাসন চলেছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইমান-আকিদা, বোধ-বিশ্বাস, আবেগ-অনুভূতি, তাহজিব-তমুদ্দন এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অবস্থান নিয়ে চালানো হয়েছে বিজাতীয় আদর্শের অপশাসন। দেশ গড়ার পরিবর্তে সব কিছুকে দলীয়করণ, আত্তীকরণ, স্বজনপ্রীতি ও অপরাজনীতি চালু করা হয়েছে। শাসকগোষ্ঠীকে দেশের মালিক ও আমাদেরকে প্রজাতে পরিণত করা হয়েছে। তারা ভালোবাসা ও আদর্শ দিয়ে দেশ শাসন করার পরিবর্তে দেশে প্রতিহিংসা ও বিভেদের রাজনীতি শুরু করেছে। দেশে কোনো সুনাগরিক তৈরির পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়নি।
মূলত, মানবরচিত মতবাদ দিয়ে দেশ শাসনের জন্যই আমাদের এই অধঃপতন হয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে ধর্ম ও রাজনীতিকে আলাদা করে দেশকে এই পৈশাচিক রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাই এবার দেশকে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। তিনি অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
থানা আমির মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মোহাম্মদপুর জোন পরিচালক জিয়াউল হাসান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদপুর থানা জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন