কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে আমাদের যেন শিক্ষা হয় : জামায়াত আমির

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও জামায়াতের লোগো। ছবি : সংগৃহীত
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান ও জামায়াতের লোগো। ছবি : সংগৃহীত

শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে আমাদের যেন শিক্ষা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, এখন থেকে আগত এবং অনাগত যারা আছে শেখ হাসিনার পরিণতি থেকে আমাদের যেন শিক্ষা হয়। জাতির সেবক হয়ে এসে মালিক বনে গেলে কী শিক্ষা হয় তা আমরা দেখেছি।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) মহানগরীর রাজবাড়ী মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানিয়ে দেব এখন থেকে বাংলাদেশের মানুষ সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলবে। আমরা চাই এমন একটি দেশ হবে যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না। আমরা কোনো সাধারণ শ্রমিককে অবহেলা করব না। আমাদের দেশে মতলববাজরা মালিক এবং শ্রমিকের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধিয়ে রাখে। শিল্প যদি না বাঁচে তাহলে শ্রমিকের কর্মসংস্থান কোথায় হবে। যারা এই সমাজের দুশমন তারাই শিল্পকে ধ্বংস করতে চায়। তারা শ্রমিকদের আবেগকে উসকে দিয়ে রাস্তায় নামায়। রাস্তায় মরে শ্রমিকরা, বেনিফিট নেয় ঘরে বসে মতলববাজরা। আমরা চাই দেশের শিল্প বাঁচুক শ্রমিকও বাঁচুক। আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে শিক্ষিত মানুষ কলমের খোঁচায় হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করবে না।

এ ছাড়া তিনি বলেন, যারা জনগণের টাকায় অস্ত্র-গুলি কিনে আবার তা জনগণের ওপর প্রয়োগ করবে এমন কোনো সরকার আমরা দেখতে চাই না। তার জন্য আমাদের দেশের ১৮ কোটি মানুষের হাত একত্রিত করতে হবে। বিশ্বকে জানান দিতে হবে দেশ ও জাতির স্বার্থে আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। আর আমরা কাউকে, কোনো জাতিকে বিভক্ত করার সুযোগ দেব না। দলের ভিত্তিতে, জাতির ভিত্তিতে, গোষ্ঠীর ভিত্তিতে আর আমরা কাউকে বিভক্তির সুযোগ দেব না। জাতিকে তারাই ভাগ করে যারা জাতির দুশমন। আমরা মতলববাজদের বলে দিতে চাই, অতীতে তোমরা যা করেছ, আগামীতে তোমাদের আর তা করতে দেব না।

নেতাকর্মীদের হত্যার বিচার চেয়ে তিনি বলেন, তারা শুধু আমাদের নেতাকর্মীদের নয়, গোটা জাতিকে হত্যা করতে চেয়েছিল। সেনাবাহিনীর ৫৭ চৌকস অফিসারকে তারা হত্যা করেছে। বিডিআর বাহিনীকে তারা ধ্বংস করেছে। নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার সিঁড়ি হিসেবে তাদের বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে। এ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই আমরা। যত আলেম-ওলামা জেলে বন্দি আছে তাদের সবার মুক্তি চাই।

তা ছাড়া আমরা উমরের মতো শাসন চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা গ্রামের মেম্বার থেকে পার্লামেন্টের মেম্বার পর্যন্ত, অফিসের পিয়ন থেকে অফিস প্রধান পর্যন্ত খোদাভিরু শাসক চাই। তবে কিছু মানুষ আছে যারা এমন শাসক চায় না। এমন মানুষ আমাদের সমাজেই বসবাস করেন। তবে খোদাভিরু শাসক আমাদের এই সমাজ থেকেই বাছাই করে নিতে হবে। আল্লাহ আসমান থেকে ফেরেশতা পাঠিয়ে দিয়ে গ্রামের মেম্বার এবং এমপি বানিয়ে দেবেন না। এই মানুষের মধ্য থেকেই আল্লাহ চান সমাজের মানুষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, ন্যায়বিচার কায়েম করার জন্য আল্লাহ কাউকে না কাউকে দায়িত্ব দেবেন।

পাশাপাশি তিনি বলেন, দেশের এত পরিবর্তন এরপরও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে কেউ বলতে পারবে না কাউকে নির্যাতন করা হয়েছে, কারও কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে, কারও ইজ্জতে টান দেওয়া হয়েছে, তখন থেকে শুরু করে কোনো ব্যবসায়ীকে হয়রানি করা হয়েছে, হুমকি দিয়েছে। আল্লাহর মেহেরবানী আমাদের কোনো নেতাকর্মী এমনটা করেনি। আমরা দফায় দফায় আন্দোলন করেছি, তবে স্বৈরাচার হঠাতে পারিনি, আল্লাহ ২০২৪ সালে এসে আমাদের সফল করেছেন। আর এ কাজটা সম্পন্ন হয়েছে আমাদের যুবসমাজ তরুণদের জন্য। আবু সাঈদ, মুগ্ধ যারা জীবন দিয়েছে তাদের জন্যে। যারা এই জাতির ওপর জুলুম করেছেন তাদের সবার বিচার চাই। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের একজনকে যোগ্যতা অনুসারে সরকারি চাকরি দেওয়া হোক এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরও চাকরির ব্যবস্থা করা হোক। আমরা আশা করব, সরকার আমাদের দাবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন।

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা অঞ্চল উত্তর টিম সদস্য আবুল হাশেম খান, গাজীপুর জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, গাজীপুর মহানগর সেক্রেটারি আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক, গাজীপুর মহানগর প্রচার সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সালাহউদ্দিন আইউবী।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সু চি হয়তো আর বেঁচে নেই : ছেলে কিম

লোকেশন ট্র্যাকিং ও নম্বর ফাঁস! মামুন, বান্নাহ ও চমককে প্রকাশ্যে হুমকি

মেসিকে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম টিকিট দিলেন জয় শাহ

বিশ্ববিদ্যালয় পরিষ্কার রাখতে পাবিপ্রবিতে ‘ক্লিন ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগে কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা রাকসু জিএসের

সিঙ্গাপুর পৌঁছেছে ওসমান হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে মহাসড়কে তল্লাশি জোরদার

১৬ ডিসেম্বর চালু হচ্ছে না অবৈধ মোবাইল ফোন, নতুন তারিখ নির্ধারণ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সিইসি দায়িত্বে থাকতে পারেন না : নাহিদ ইসলাম

১০

কিডনি খারাপ হওয়ার আগে সংকেত দেয় চোখ, যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন

১১

সিইসির বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ জামায়াত আমিরের, ব্যাখ্যার দাবি

১২

ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে গড়তে ভিশনারি নেতা লাগবে : ববিপ্রবি ভিসি

১৩

খেজুরের রস পানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু

১৪

ফয়সালের স্ত্রী-শ্যালকসহ তিনজন ৫ দিনের রিমান্ড

১৫

পর্দায় কাউকে চুমু খাবেন না জর্জ ক্লুনি

১৬

আনিস আলমগীর ৫ দিনের রিমান্ডে 

১৭

র‌্যাক সিরামিক নবায়ন করল মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর চুক্তি

১৮

নারীদের একমাত্র কাজ স্বামীর সঙ্গে থেকে সন্তান জন্মদান : প্রার্থীর বিতর্কিত মন্তব্য

১৯

মোবাইল ফোনের দাম নিয়ে সুখবর দিল এনবিআর

২০
X