ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বলেছেন, বিগত আওয়ামী সরকার এই দেশের নয় বরং বিদেশি দালাল সরকার হিসেবেই শিক্ষানীতিসহ বিভিন্ন সেক্টরে দেশ ও ধর্মবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছিল।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
পাশাপাশি তিনি বলেন, কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, রক্তের সাগর পেরিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি, তাদের মধ্যেও শিক্ষানীতিতে ইসলাম ও মুসলমানদের বিশ্বাস ও আদর্শকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে আন্তরিকতার ঘাটতি আছে বলে মনে হচ্ছে।
এ ছাড়া তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠ এখন যথেষ্ট উর্বর। এ দেশের মানুষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যক্রমকে পর্যবেক্ষণ করে সন্তুষ্ট হয়েছে, আগামীতে তারা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে ক্ষমতার ভার অর্পণ করতে চায়।
ঐক্যের ব্যাপারে তিনি বলেন, জন্ম থেকেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঐক্যকামী দল। আমাদের মরহুম আমির শায়খ সৈয়দ ফজলুল করীম (রহ.) ঐক্যের ব্যাপারে অধীর আগ্রহী ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের কাছে গিয়ে গিয়ে ঐক্য ও সম্প্রীতির বাণী ছড়িয়ে গেছেন আমৃত্যু। আমরাও সে পথ ধরে ঐক্যের বার্তা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের নেতাদের কারও কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন বা ঐক্যবিরোধী বার্তা পেয়ে থাকেন, আমরা তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা সবাইকে নিয়ে ইসলামকে ক্ষমতায়ন করতে চাই ইনশাআল্লাহ।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর ভূমিকা ছিল অনন্য। এছাড়াও এই আন্দোলনে ৭৩ হাফেজ আলেম শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। সুতরাং আলেম-ওলামারা এ দেশের সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সব সময় সজাগ ছিলেন।
ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মাদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মানসুর আহমদ সাকীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, মাওলানা ইউনুস আহমদ, গাজী আতাউর রহমান, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেএম আতিকুর রহমান, নূরুল ইসলাম আল আমীন, নূরুল করীম আকরাম, বরকত উল্লাহ লতিফসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আতিকুর রহমান মুজাহিদ, শেখ মুহাম্মাদ মারুফ, রহমাতুল্লাহ বিন হাবিব, মুহাম্মদ ইলিয়াস হাসান, আ হ ম আলাউদ্দিন, আবু বকর সিদ্দীক, মুহাম্মাদ মাহবুব আলম, মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম শাহিন, আহমদ আবদুল জলিল, মুহা. আল-আমিন, শেখ ইহতেশাম বিল্লাহ আজিজী, জুবায়ের আহমদ, একেএম আবদুজ জাহের আরেফী, এসএম আজিজুল হক প্রমুখ।
এ দিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, চোর-দুর্নীতিবাজ, ডাকাত দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্রগঠন করা সম্ভব নয়।
শনিবার সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চকবাজার থানা শাখার উদ্যোগে চকবাজার শাহী মসজিদ চত্বরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যার ভিতর ইনসাফ নেই, যে দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, ধর্ষক, জালিম সে ব্যক্তি কীভাবে ইনসাফভিত্তিক সমাজ উপহার দেবে? কাজেই জালিম ও চোর-ডাকাতদের হাত থেকে ইসলামপন্থিদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ ছাড়াও শ্যামপুর থানা শাখার উদ্যোগে পোস্তগোলা ব্রিজ সংলগ্ন মাইক্রো বাসস্ট্যান্ডে বিশাল গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। থানা সভাপতি বেলাল হোসাইনের সভাপতিত্বে নগর দক্ষিণ ও থানা নেতারাসহ অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আব্দুর রহমান, আবুল কাশেম, ডা. শহীদুল ইসলাম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি আখতারুজ্জামান, শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া, সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন