কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে’

প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি : কালবেলা
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। ছবি : কালবেলা

রাসুল (সা.) আমাদের প্রকৃত মডেল। তাই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক তথা জীবনের সব ক্ষেত্রেই তার সিরাত ও আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে আমাদের মুক্তি অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কোরআন ও ইসলামী জ্ঞান’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জীবনের সকল ক্ষেত্রে রাসুল (সা.) আমাদের প্রকৃত আদর্শ ও মানদণ্ড। মানবজীবনের এমন কোনো সমস্যা নেই যে সমস্যার সমাধান ইসলামে নেই। মূলত, রাসুল (সা.) এর জীবন ছিল ঘটনাবহুল এবং চড়াই-উতরাইয়ে পরিপূর্ণ। তাই মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধানে রাসুল (সা.) এর সিরাত অধ্যয়ন ও তা যথাযথভাবে অনুসরণ করার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে রাসুল (সা.) এর প্রকৃত সিরাত জানতে দেওয়া হয় না। একটি কুচক্রীমহল রাসুল (সা.) জীবনাদর্শ ও সিরাতকে বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা তার ব্যক্তিগত জীবন, ইবাদত বন্দেগি এবং সমাজ-রাষ্ট্রের ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রচষ্টাকে আলাদা করেছে। অথচ রাসুল (সা.) এর আদর্শের মাধ্যমে মানুষের ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনসহ সকল সমস্যার সমাধান দিয়েছেন। মূলত, দেশের শিক্ষা কারিকুলামে রাসুল (সা.) এর সিরাত অন্তর্ভুক্ত করা গেলে দেশ থেকে মানবরচিত সব মতবাদের অপমৃত্যু ঘটবে এবং ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানেই শান্তি। যেখানে ইসলাম নেই সেখানে জুলুম-নির্যাতনসহ নানাবিধ অশান্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে। আর দোষ চাপানো হয় ইসলাম ও ইসলামী আদর্শ অনুসারীদের ওপর। মূলত, মানবরচিত কোনো মতবাদই মানুষের জন্য কল্যাণকর নয়। কারণ, মানুষের তৈরি মতবাদ কখনো নির্ভুল হবে না। তাই কোনো মুসলমানের মানবরচিত মতবাদ সহ্য করার কোনো সুযোগ নেই। বস্তুত অহীর বিধানই নির্ভুল বিধান। রাসূল (সা.) অহির বিধান দিয়েই একটি ন্যায়-ইনসাফপূর্ণ কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। কিন্তু আমরা এমন এক কপাল পোড়া জাতি যে, আমাদের কোনো সরকারই অহির বিধান দিয়ে দেশ পরিচালনা করেনি। তারা ইসলামকে মসজিদ ও মাদ্রাসার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছে। ফলে আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য জীবনের সকল ক্ষেত্রেই আমাদেরকে রাসূল (সা.) এর সিরাত অনুসরণ করতে হবে। তিনি অহীর বিধানভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, রাসুল (সা.) জীবনই সর্বোত্তম জীবনাদর্শ। আল্লাহ তা’য়ালা তাকে উত্তম বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করে বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত হিসাবে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছিলেন। তাই এই অশান্ত পৃথিবীতের শান্তির বাতাস বইয়ে দিতে আমাদেরকে রাসুল (সা.) এর অনুসৃত নীতি অনুসরণ করতে হবে সমাজরাষ্ট্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের জন্য অনুসরণ করতে হবে অহীর বিধান। জামায়াতে ইসলামী সে লক্ষ্যেই দীর্ঘ পরিসরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, মূলত, বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শই সর্বোত্তম জীবনাদর্শ। আর পুরো কোরআনই রাসুল (সা.) এর জীবন। তাই দেশ থেকে সকল অশান্তি দূর করতে হলে ঘরে ঘরে কোরআনের দাওয়াত সম্প্রসারণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সিরাত শেখাতে হবে। সে লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বিশিষ্ট মুফাচ্ছিরে কোরআন, ক্বারী মাওলানা হাবিবুল্লাহ বেলালী, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্বারী হাফেজ মাওলানা এ কেম এম ফিরোজ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের উলামা বিভাগের সভাপতি ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, কোরআন ও ইসলামী জ্ঞান প্রতিযোগিতায় ২০ সহস্রাধিক ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন ইভেন অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে বিজয়ী ২১৮ জনকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও নগদ ১৮ লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শেখ হাসিনা বিদায় নেওয়ায় ১৮ কোটি মানুষ মুক্তি পেয়েছে : জামায়াত সেক্রেটারি

যে কারণে ডিভোর্স হচ্ছে ঊর্মিলার 

নড়াইলে জবি ছাত্রদল কর্মীকে কুপিয়েছে আ.লীগ কর্মীরা

অবশেষে আর্জেন্টিনা দলে ফিরছেন মেসি

প্রশাসনে আ.লীগের দোসরদের রেখে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয় : রিজভী

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই

ভারতে পালানোর সময় সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের কোষাধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

বৃষ্টিতে ভেসে গেল কানপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন

বিভক্তি নয়, ঐক্যই হোক জাতির সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধি : জামায়াতের আমির

পাকিস্তান করুণ পরিণতি ডেকে আনছে, হুংকার ভারতের

১০

টেকনাফে সড়কে ডাকাতি, ৫ জনকে অপহরণ

১১

শুল্ক কমিয়ে চাল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ভারতের

১২

মাতাল হয়ে গেট ভেঙে বাংলাদেশে ঢুকে পড়া দুই ভারতীয় আটক

১৩

মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি বাড়াতে পিনাকীর পরামর্শ

১৪

নেইমারের দলে ফেরার সময় জানালেন ব্রাজিল কোচ

১৫

বিশ্ব সংকট নিয়ে ড. ইউনূসের ভাষণ, যা বলছে জাতিসংঘ

১৬

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সরফরাজের ভাই মুশির

১৭

গুলশানে চায়ের দোকান থেকে ২ জনের মরদেহ উদ্ধার

১৮

সাদিয়া আয়মানের সেই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা বললেন মৌসুমী  

১৯

৪০ টাকায় পুলিশে চাকরির সুযোগ

২০
X