বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাই সরকারকে দানবে পরিণত করে এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, “জাপার রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিলো আওয়ামী লীগ।
সংবিধানে সরকারপ্রধানকে অপরিসীম ক্ষমতা দেওয়া হেয়েছে। এতে ভালো নির্বাচনে জয়ী হয়ে জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দলও ক্ষমতা অপর্যবহার করে দানবে পরিণত হয়ে যায়। আমরা মনে করি, ভালো নির্বাচনের আগে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। তবেই ভালো নির্বাচনের পর ভালো সরকার পাওয়া যাবে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দলের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমরা চাই, দেশের মালিকানা যেন সাধারণ মানুষের হাতে থাকে একথা উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ যেন ইচ্ছে অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। সরকারের জবাবদিহিতা থাকবে সাধারণ মানুষের কাছে। সরকার যদি জনগণের ইচ্ছের বাইরে দেশ পরিচালনা করে, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে যেন সাধারণ জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার পরিবর্তন করতে পারে।
জাতীয় পার্টি সব সময় জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী রাজনীতি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের পক্ষে থেকেই রাজনীতি করেছে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিল। তখন আওয়ামী লীগ সরকার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে আটক করে। তখন দলের চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই। আমি নিজেও ২০১৪ সালের নির্বাচন করিনি, সংসদে যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপ দিয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিজস্ব রাজনীতি করতে বাঁধা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ এমন অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের অনেক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছিল। বিএনপির সংসদ সদস্যরা প্রায় চার বছর সংসদে থেকে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। সবাই জানে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। জাতীয় পার্টিকে দুটি ভাগ করে রেখেছিলো সরকার একথা জানিয়ে তিনি বলেন, একটি ঠুনকো মামলার আদেশে প্রায় চার মাস আমাকে দল পরিচালনা থেকে বিরত রেখেছে। আমাদের দলের পরিচয়ে সরকার আরেকটি গ্রুপকে কাউন্সিল করতে দিয়েছিলো। আমাদের রাজনীতি ও দল পরিচালনায় অনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছিলো আওয়ামী লীগ।
জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পার্টির মহাসচিব বীর মুত্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু, অ্যাড. বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন, অ্যাড. ড. নুরুল আজহার শামীম, অ্যাড. আব্দুল হামিদ ভাষানী, অ্যাড. ইউসুফ আজগর, অ্যাড. আব্দুর রশীদ, অ্যাড. জিন্নাত আলী, অ্যাড. আবুল হাসনাত মাসুম, অ্যাড. শহীদুল ইসলাম মোল্লা, অ্যাড, ফিরোজ আহমেদ, অ্যাড. মোহাম্মদ আলী, অ্যাড. মো. মেহেদী হাসান ও অ্যাড. আবু ওহাব।
মন্তব্য করুন