বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই সরকারকে একটি ভালো নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে হবে। সেই উদ্যোগের সঙ্গে দেশবাসী এ সরকারের সঙ্গে থাকবে এবং ভালো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই দেশের মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের উদ্যোগে গণহত্যাকারী স্বৈরাচার খুনি হাসিনার পতন আন্দোলনে আহত ও শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা পতন আন্দোলনে এখনো অনেক ভাই ও বোন আহত হয়ে হসপিটালে ভর্তি আছেন। সরকার তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি সরকারকে তাগিদ দিতে চাই, দ্রুত তাদের সহযোগিতা করার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর পেরিয়েছে। অনেকেই বলে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে ৫ আগস্ট। আওয়ামী লীগ সরকার এতটাই নির্মম, স্বৈরাচার ছিল যে, মানুষ তাদের স্বাধীনতাটা ভুলে গিয়েছিল। মানুষের কোনো অধিকার ছিল না। মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে সে অধিকার হারিয়ে ফেলেছিল। এই আওয়ামী লীগ সীমাহীন লুটপাট করেছে। একটা দলের নেতাকর্মী দলের প্রধানের পরিবার দেশের প্রতিটি সেক্টর থেকে লুটপাট করে বিদেশে অর্থপাচার করেছে। এটা ভাবা যায়?
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার যে লুটপাট করেছে তার নেতাকর্মীদের কাছে লাখ লাখ অস্ত্র দিয়েছে। সেই অস্ত্র বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হেফাজতে নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ও দেশবাসীর প্রত্যাশা এই সরকার একটি ভালো নির্বাচন দেবে। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য দেশবাসীর ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিএনপি আগাগোড়া অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে থাকবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সরকারকে সমর্থন জানিয়েছেন যাতে এই সরকার নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারে, ভালো নির্বাচন দিতে পারে।
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষকে ভোট দিতে দেয় নাই। তাই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিদায় করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে এই বিশ্বাস তারা করে। এ জন্য সরকারকে সতর্ক হতে হবে। নির্বাচনের দিকে যাতে এগিয়ে যেতে পারে তার জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের পার্বত্য অঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গায় ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এমনকি বায়তুল মোকাররমের যে ঘটনা ঘটেছে এটা খুবই নিন্দনীয় এবং আশঙ্কাজনক। সে জন্য এই সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে যারা এক সাগর রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলনে এবং জীবন উৎসর্গ করেছে তাদের যে দাবি সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এ সময় দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে কৃষক দলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজম ধ্বংস হয়ে গেছে এটা মনে করা যাবে না। তারা নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের হাতে বিপুল অর্থ ও অস্ত্র আছে। একটি বড় দেশ তাদের সমর্থন করছে। সেহেতু ছোট করে দেখার কোনো অবকাশ নাই। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
আওয়ামী লীগকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আপনাদের বেশি বাড়াবাড়ি করা ঠিক হবে না। দেশবাসী যদি একবার ঘুরে দাঁড়ায় কি হয় সেটা দেড় মাস আগে দেখেছেন। এ দেশের মানুষ যেমন নরম তেমনি গরম।
সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, মাইনুল ইসলাম, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রদান, কৃষক দলের সহসাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক দল নেতা সাদি, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন