ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর উপর হামলা ও ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদারকে হত্যার প্রতিবাদে সামাজিক সংগঠন ‘প্রতিবাদ’-এর উদ্যোগে এই কর্মসূচি হয়।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে গত ১৬ বছরে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। জনগণের আন্দোলনকে প্রতিহত করার জন্য তার নির্দেশে নির্বিচারে গুলি ও গণহত্যা চালানো হয়েছে। এ জন্য তাকে বিচারের আওতায় আনতেই হবে। বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুসারে শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে তার বিচার করতে হবে। এটি বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের দাবি।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ফজলে নূর তাপসসহ যারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে, সেই শেখ পরিবারের সদস্যরা এখনো কোনো গ্রেপ্তার হচ্ছে না? এখনো তাদের কেন বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না? অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা আপনাকে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা আপনার সঙ্গে আছি এবং আপনার সরকারের সঙ্গে থাকব। তবে যে বিষয়গুলো সংসদের মাধ্যমে সমাধান দরকার সেগুলো তাদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। সংস্কার দরকার, তার সঙ্গে দরকার জনগণের ভোটের ব্যবস্থা করা।
জয়নুল আবদিন ফারুক আরও বলেন, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় আমরা বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে একসঙ্গেই জেলে ছিলাম। তিনি শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন, তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো। এক সপ্তাহ পর তাকে ফিরিয়ে আনা হলো স্ট্রেচারে করে। কী অপরাধ ছিল তার? তারেক রহমানের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং তাকে দেশের মাটিতে সসম্মানে ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় চক্রান্তে বিশ্বাসী। দলটির মধ্যে সততার অভাব রয়েছে বলেই নেতাকর্মীরা চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে অন্যায়-অপকর্ম করে দেশকে অস্থিতিশীল করে যাচ্ছে। তাদের সেই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র থেকে ফিরে আসতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি ইব্রাহিম হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের আরেক সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজী, মো. জহিরুল ইসলাম করিম, বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, অপরাজেয় বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সিরাজী, উন্মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদের সভাপতি রমিজ উদ্দীন রুমি, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন সরদার, প্রজন্ম একাডেমির কোষাধ্যক্ষ আবু হায়দার প্রমুখ নেতার।
মন্তব্য করুন