কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আ.লীগ উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতেছিল : আজাদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধানমন্ডি দক্ষিণ থানার কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধানমন্ডি দক্ষিণ থানার কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেছেন, উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে ছিল আওয়ামী লীগ। তারা বাংলাদেশকে দেউলিয়ার পর্যায়ে নিয়ে গেছে।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল দমন করা আওয়ামী লীগের রাজনীতির মূলনীতি।

হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ছিল ক্ষমতায় গেলে কুরআন ও সুন্নাহর বিরুদ্ধে কোনো আইন তারা করবে না। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের সাড়ে ৩ বছরে দেশে সব ইসলামী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি চলবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। ইসলাম ছাড়া কোনো জাতি প্রকৃত শান্তি পেতে পারে না এবং পায় না। শেখ হাসিনা তার পিতার পথেই হেঁটেছে। যার ফলে শেখ হাসিনাও জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করেছে এবং সবশেষ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে। ফেরাউনের প্রেতাত্মা শেখ হাসিনা দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেছে, তার পরে দেশ চালাবে কে? তিনি শুধু নিজেকেই যোগ্য মনে করেন। আর কেউ যোগ্য নয়, কারও কোনো যোগ্যতা নেই বলে তিনি নিয়মিত উপহাস করতেন। কিন্তু ফেরাউনের প্রেতাত্মা শেখ হাসিনার সেই দাম্ভিকতার জবাব বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দিয়ে দিয়েছে।

ধানমন্ডি দক্ষিণ থানা আমির হাফেজ রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জোবায়দুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় কর্মী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, জোন পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আল আমিন শেখ, হাজারীবাগ-কামরাঙ্গীচর জোন পরিচালক অধ্যাপক নূর নবী মানিক, সহকারী জোন পরিচালক আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য জসিম উদ্দীন তালুকদার, ধানমন্ডি উত্তর থানা আমির আবু শাহাদাত মোহাম্মদ আলী, কলাবাগান পূর্ব থানা আমির জাহেনুর রহমান, কলাবাগান পশ্চিম থানা আমির মাহবুব রশিদ প্রমুখ।

এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো জনস্বার্থে রাজনীতি করেনি। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসাই ছিল তাদের রাজনৈতিক অপকৌশল। ২০০৮ সালে একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় আসার পর থেকে শেখ হাসিনা গণভবন দখল করে রাখার জন্য, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ার ধরে রাখার জন্য ভারত যা চেয়েছে তাই দিয়েছে। শেখ হাসিনা স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছে, তিনি ভারতকে যা দিয়েছেন ভারত তা কখনো ভুলতে পারবে না। কারণ তিনি ভারতের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি দিয়েছেন। সে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ খুনি শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠা করা ব্যাংক, বিমা আওয়ামী লীগ লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আর অল্প কিছুদিন ক্ষমতায় থাকতে পারলে, স্বাধীন বাংলাদেশকে দেউলিয়া ঘোষণা করিয়ে ছাড়ত। আর এ সুযোগে ভারত বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশকে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য করত। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সে অপচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ধানমন্ডি একটি অভিজাত এলাকা। কিন্তু এই অভিজাত এলাকাকে গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ অভিশপ্ত এলাকায় পরিণত করেছে। হেলমেট আর হাতুড়ি বাহিনী তৈরি করেছে। ৩২ নম্বর রোড আটকে রেখে ছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এই এলাকায় আদর্শ কর্মী তৈরি করে রেখেছে। এই আদর্শিক কর্মীরা আগামীতে ধানমন্ডির গণমানুষের নেতৃত্ব দিবে। মানুষের স্বপ্নের অভিজাত এলাকাকে অভিশাপ মুক্ত করবে।

এক ব্যক্তি বা দলের জন্য স্বাধীন দেশের একটি রাস্তা বা অঞ্চল আটকে দিয়ে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতে সব রাস্তা, সব অঞ্চল জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালকে পুঁজি করে, মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি করে একক ফায়দা লুটে নিতে চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তির বা দলের একার নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে জনগণের রক্তের বিনিময়ে। আর সেই স্বাধীনতাকে আওয়ামী লীগ পৈতৃক সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছে। যার ফলে প্রতিবাদী মানুষ তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। শেখ হাসিনার ছেলে বলেছে, তার মাকে কুকুরের মতো তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কুকুরের মতো আচরণ করলে তাকে তো কুকুরের মতোই তাড়িয়ে দিতে হয় বলে মন্তব্য করেন ড. মাসুদ। যে দেশের মানুষের বুকে গুলি চালাতে নিদের্শ দিতে পারে, গুলি চালাতে বাধ্য করতে পারে, আহত-নিহত মানুষকে ভ্যান গাড়িতে তুলে আগুনে পুড়ে দিতে বলে সে মনুষ্যত্বহীন খুনি হাসিনার প্রতি বাংলাদেশের জনগণ সবচেয়ে বড় দয়া দেখিয়েছে- তাকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

ড. মাসুদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে বা ক্ষমতার বাইরে থেকে সমান তালে মানুষ হত্যা করে। মানুষ হত্যা আওয়ামী লীগের পুরোনো ইতিহাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার নিদের্শে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এখন চোর অপবাদে মানুষ হত্যা করে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগ উঠে পড়ে লেগেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রলীগ সরাসরি জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নাশকতার মামলায় আসামি হলেন ৫ সাংবাদিক

মেহেরপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে মাদকসহ আটক ২

‘৩০০ আসন নিয়েও শেখ হাসিনা টিকে থাকতে পারেননি’

চট্টগ্রামে টার্ফ কোট দখল নিয়ে ছাত্রদলের বিরোধ, নিহত ১

বনানীর সুইট ড্রিম হোটেল থেকে ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, আটক ৫

নজরুলের প্রয়াণবার্ষিকীতে ছায়ানটের নিবেদন

সারাদেশে তাপপ্রবাহ / গরমে হাঁসফাঁস, রয়েছে বৃষ্টির সম্ভাবনাও

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ

‘হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে’

সন্ত্রাসীদের গডফাদারদের আটক করতে হবে : ব্যারিস্টার খোকন

১০

ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার : তারেক রহমান

১১

‘ভাত তারা দিতে চায়, আমি খাই না’

১২

ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে মশার ওষুধ সরবরাহ করবে উত্তর সিটি

১৩

মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম প্রতিদিন গণমাধ্যমকে জানাবে ডিএসসিসি

১৪

অন্তর্বর্তী সরকারের কাজে ডাবল ইঞ্জিনের গতি আনা জরুরি : সাইফুল হক

১৫

বিয়ের দাবিতে রানার বাড়িতে চাচির অনশন

১৬

মানবসম্পদ উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ

১৭

গতিশীল নেতৃত্বে সংকটকাল কাটিয়ে উঠছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

১৮

লেবানন যোদ্ধাদের রকেট হামলায় জ্বলছে গোলান মালভূমি

১৯

ঢাবিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের

২০
X