ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের পতন হলেও তার আশীর্বাদপুষ্ট অনেক সচিব এখনো বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নাশকতা করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ অভিযোগ করেন। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মধ্যপ্রাচ্যের সাংগঠনিক সমন্বয়ক আহমদ আলী মুকিবসহ প্রবাসী নেতাদের নিয়ে জিয়ার কবরে এ শ্রদ্ধা জানান রিজভী।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সাঙ্গ-পাঙ্গরা, সুবিধাবাদীরা এখনো বিদায় নেয়নি; প্রশাসনের অনেক জায়গায় তারা রয়েছে। অনেক সচিব শেখ হাসিনার জন্য কাজ করেছে, তারা এখনো আছে। তারা বিভিন্নভাবে ঝামেলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বিভিন্নভাবে নাশকতা করার চেষ্টা করছে। তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের আমলে অনেকগুলো নির্বাচন হয়েছে। আপনারা সংসদ বিলুপ্ত করেছেন, উপজেলা বিলুপ্ত করেছেন, তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা এখনো বহাল আছে কেন? এরাই তো আওয়ামী লীগের সাঙ্গ-পাঙ্গ, এদের দিয়েই গণতন্ত্রের আন্দোলনকারীদের হত্যা করেছে। এরা কেউ নির্বাচিত নয়, শেখ হাসিনা সিলেকশন করে তাদের নাম দিয়েছে। তাহলে সেই ইউপি চেয়ারম্যানরা আজও টিকে আছে কী করে? এরা তো শেখ হাসিনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুধু ঢাকায় মারা গেছে তা নয়, গ্রাম-গঞ্জেও অনেকে মারা গেছে। তাদের মারার পিছনে এই ইউপি চেয়ারম্যানরা জড়িত। পুলিশের ছত্রছায়ায় আমাদের নেতাকর্মীদের তারা গুলি করেছে। তারা কী করে এখনো চেয়ারম্যান থাকে? তৃণমূলে যারা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখতে চায়, অবিলম্বে তাদের বাতিল করতে হবে।
শেখ হাসিনার টাকা পাচারের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, দেশের টাকা তো শেখ হাসিনার না। কিন্তু তিনি অবাধে লুট করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। শেখ হাসিনার আমলে ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। তার পরিবারের লোকজন, আত্মীয়-স্বজন, এমপি-মন্ত্রী এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সমর্থক ব্যবসায়ীরা এর সঙ্গে জড়িত। গুম-খুনের জননী শেখ হাসিনা যত দুর্নীতি করেছে, তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হতে হবে। যাতে আর কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে না পারে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, এস আলমকে দিয়ে শেখ হাসিনা বিদেশে টাকা পাচার করিয়েছেন। কারণ, তিনি জানতেন যদি কখনো পালিয়ে যাই, তাহলে সে টাকা তখন নিবে। এস আলমের কাজের মেয়ের অ্যাকাউন্টে ১ কোটির বেশি টাকা এবং কাজের মেয়ের স্বামীকে একটি ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার করা হয়েছে। এটা যেন আলাদিনের চেরাগ। প্রিন্সিপাল অফিসার হতে কতটুকু লেখাপড়া জানতে হয়, ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র হতে হয়? শেখ হাসিনার এটাতে কিছু যায়-আসে না। শেখ হাসিনা যদি পালিয়ে যায়, তাহলে বিদেশে তার ব্যয় নির্বাহ করবে কে? এই কারণে একের পর এক মিডিয়া এবং ব্যাংক এস আলমকে দিয়ে দিয়েছেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সৌদি পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সদস্যসচিব তপন চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, কাতার বিএনপির সদস্যসচিব শরিফুল হক সাজু, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহেদ আহমেদ রাসেল, দুবাই বিএনপির সভাপতি রফিকুল আলম, সংযুক্ত আরব আমিরাত শাখা শ্রমিক দলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাহে আলম প্রমুখ।
মন্তব্য করুন