শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার : দুদু

জাতীয় প্রেস েক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস েক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি : কালবেলা

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায় মুক্তির সময়। যদি তারা এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায়, তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) যৌথ উদ্যোগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালাকানুন বাতিল, সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবিতে এক সামবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সহসভাপতি রাশেদুল হক, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সাগর-রুনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। যে সরকারের সময় হত্যা করা হয়েছিল, সেই সরকারের অনেক প্রিয়ভাজন ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে অনেক মানুষ মনে করে। এ কারণে দীর্ঘ সময় এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হয়েছে, কিন্তু চার্জশিট দেওয়া হয়নি। এখন এই সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) দায় মুক্তির সময়। যদি তারা এই দায় কাঁধ থেকে নামাতে চায়, তাহলে সাগর-রুনি হত্যার বিচারের প্রাথমিক স্তর পরিষ্কার করা দরকার৷ তারা বলেছে, এটি তারা করবে। আমরাও বিশ্বাস করি এটি তারা করবে। কিন্তু সময় থাকতে তা শেষ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। সেই বিবেককে যদি মুক্ত না করা হয়, কালা কানুন যদি বাতিল করা না হয়, তাহলে দেশের কি পরিস্থিতি এটি তুলে ধরা সাংবাদিকদের জন্য খুব কঠিন। এই সরকারের সাংবাদিকরা যে দাবি জানিয়েছে, আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সেটি সমর্থন করছি।

বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। এটাকে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে জরুরি কাজ বলে মনে করি।

হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এখনো অনেক কালাকানুন আছে। এগুলো বাতিল করতে হবে। একটি গ্রহণযোগ্য আইন করতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে সকল আইন করা হয়েছে, সে সকল আইন বন্ধ করতে হবে।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ যেসকল হত্যাকাণ্ড হয়েছে তাদের বিচারের দাবিতে আমার এখানে দাঁড়িয়েছি। সাংবাদিকদের জন্য সুরক্ষা আইন করতে হবে। মুক্তভাবে সাংবাদিকতা করার সুযোগ করে দিতে হবে। যে সকল সাংবাদিকরা হাসিনার কুকর্মে সমর্থন দিয়েছে আমরা তাদেরও বিচার চাই। আমাদের দাবিগুলো অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। সাগর-রুনির হত্যার বিচার অবিলম্বে করতে হবে।

কবি হাসান হাফিজ বলেন, এখনো কালাকানুনগুলো দূর হয়নি। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এখনো নিরঙ্কুশ হয়নি, নিশ্চিত হয়নি। অনেক সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। সেগুলোর বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি। কালাকানুনগুলো যেনো রোধ করা হয়৷ সাগর-রুনির প্রকৃতি খুনিদের যেন চিহ্নিত করা হয় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। একটি অন্তর্বর্তী সরকারের এখন দেশ চালাচ্ছে। তারা একটি সংস্কারের কাজ করছে। আমাদের দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রত্যেকের দায়িত্ব তাদের সহায়তা করা, সংস্কারের ক্ষেত্র তৈরি করা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া সুগম করা। সেক্ষেত্রে আমাদের সবার দায়-দায়িত্ব আছে।

৩৬ জুলাই শেষ হয়ে যায়নি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সংস্কার চলতেই থাকবে। এই সংস্কার শুরু হয়েছে এবং পরবর্তীতে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের হাতে সেই সংস্কার চলবে। গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি এখনো অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছ। সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি এবং আঞ্চলিক ও পরাশক্তিগুলোর মধ্যেও আমাদের এই সাফল্য নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র আছে। এগুলোর ব্যাপারে আমাদের সচেতন হতে হবে। আমরা যেন এগুলো সম্মিলিতভাবে, ঐক্যবদ্ধভাবে, সচেতনতার সঙ্গে, পরিপক্কতার সঙ্গে, ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করি।

সভপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম। আমরা তিনটা দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। প্রথম দাবি ছিল এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। দ্বিতীয় দাবি ছিল সাগর রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার। তৃতীয় দাবি ছিল সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিতে হবে। দীর্ঘ আন্দোলন এবং সংগ্রামের পরে সর্বশেষ জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে, ছাত্র জনতার রক্তের উপর দিয়ে আজকে এই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এখনো দুটি দাবি আদায় হয়নি। সেগুলো হলো, সাগর রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার হয়নি। আমরা উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আহ্বান রাখতে চাই, অবিলম্বে সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। এর বাইরে আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। কোনো তালবাহানা দেখতে চাই না। আমরা ১৬ বছর ধরে যে দাবি করে আসছি সেটার থেকে এক চুলও নড়ব না। সাগর রুনিসহ ৬৫ জন সাংবাদিক হত্যার বিচার করতে হবে। এরপরে সকল বন্ধ গণমাধ্যম গুলোকে খুলে দিতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দিনমজুরকে গলা কেটে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

জাবিতে কোনো কমিটিই নেই, হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে : ছাত্রদল

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল গৃহবধূর

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আটক

দেশের ৩ অঞ্চলে হিট ওয়েভের শঙ্কা

ঢাকাস্থ গণচীনের দূতাবাসের প্রতিনিধিদলের ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ

চট্টগ্রামে হাতকড়া পরে ফিরল সাবেক এমপি ফজলে করিম

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রতিরোধে একমত যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স

প্রধান উপদেষ্টার / সহকারী প্রেস সচিব হলেন দুই তরুণ সাংবাদিক

শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব, শিক্ষাব্যবস্থায় অচলাবস্তা

১০

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ধূম্রজাল

১১

গণপিটুনির ঘটনায় / জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

১২

জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তারেক রহমান

১৩

বিশেষ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার দাবি লায়ন ফারুকের

১৪

জাবিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যা, এক সমন্বয়ককে অব্যাহতি

১৫

ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

১৬

মাদারীপুরে কৃষককে পিটিয়ে হত্যায় মানববন্ধন

১৭

জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিডের টাওয়ার পদ্মায় বিলীন

১৮

দীঘিনালায় দুপক্ষের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ

১৯

তিন মাস ধরে ১৪০০ চা শ্রমিকের মজুরি বন্ধ

২০
X