কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব : মুন্না

বক্তব্য রাখছেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। ছবি : সংগৃহীত
বক্তব্য রাখছেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেছেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার গত সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছে। শত নির্যাতন-নিপীড়ন, গুম-খুন সত্ত্বেও বিএনপি রাজপথ ছাড়েনি।

হাসিনাবিরোধী আন্দোলন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা একদিনের জন্যও সরে যায়নি। সাড়ে ১৫ বছরের ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে আগামীতে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই গণসমাবেশ হয়।

মোনায়েম মুন্না বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এ দেশে প্রকৃত গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল। ঘটনা পরম্পরায় দেশে বহুবার এই গণতন্ত্র ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের ৯ বছরের শাসনামল ছিল গণতন্ত্র ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার আরেকটি ধাপ। আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলনে দেশে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন হয়েছিল।

এরপর স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের শাসনামল। গত ১৭ বছর ধরে আমরা বাংলাদেশে নিষ্পেষিত-নির্যাতিত। বিশেষ করে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রেজিমের গত সাড়ে ১৫ বছর আমরা নির্যাতিত, গুম-খুনের শিকার। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ পরিক্রমায় সবচেয়ে নির্যাতিত জিয়া পরিবার। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছিল। সাড়ে ছয় বছর তিনি কারাবন্দি ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকার অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে যে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছিল, বাংলাদেশের ইতিহাসে তা বিরল ঘটনা। এই ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর ওপর চালানো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এই স্টেজে (গণসমাবেশ মঞ্চ) এমন কোনো নেতা নেই, যিনি কারাবন্দি ছিলেন না। কিন্তু শত নির্যাতন-নিপীড়ন সত্ত্বেও বিএনপি রাজপথ ছাড়েনি। হাসিনাবিরোধী আন্দোলন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা একদিনের জন্যও রাজপথ থেকে সরে যায়নি। সাড়ে ১৫ বছরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে।

যুবদল সভাপতি বলেন, আন্দোলনের শুরুতেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। নির্দেশনা মেনে আমরা রাজপথে ছিলাম। একপর্যায়ে তিনি একদফার ভিত্তিতে আন্দোলনের ডাক দেন। সুতরাং ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাজপথে বিএনপির কী ভূমিকা ছিল, দেশের জনগণ তা ভালভাবে জানে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলমান রয়েছে। আগামীতে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।

তিনি বলেন, সম্প্রতি নিজ এলাকা গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর ওপর হামলা চালানো হয়। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটি স্টেকহোল্ডার গোপালগঞ্জে অবস্থান করছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব, অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করুন।

তিনি আরও বলেন, হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমকে দীর্ঘায়িত করতে প্রশাসনের যারা ভূমিকা রেখেছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাদের অনেকে এখনো প্রশাসনে বহাল রয়েছে।

মোনায়েম মুন্না বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথে আছি, আগামীতেও থাকব।

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর পাটোয়ারিসহ দল ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাবিতে হত্যার ঘটনায় সমন্বয়ক বাকেরের স্ট্যাটাস

হাসানের বীরত্বে প্রথম সেশন বাংলাদেশের

নোবিপ্রবির কোটি টাকার প্রকল্পে স্থবিরতা

হবিগঞ্জে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান

ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে হত্যা, ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করবে ঢাবি

মানসিক ভারসাম্য হারানোর আগে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন তোফাজ্জল

ভোলায় সাবেক এমপি মুকুলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা-চাঁদাবাজির মামলা

ফেনীতে নেতাকর্মীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি

বুধবার রাতে ঢাবিতে কী ঘটেছিল জানালেন শিক্ষার্থীরা

হাসান মাহমুদে বিধ্বস্ত ভারতের টপ অর্ডার

১০

প্রেম করে মানসিক ভারসাম্য হারান ঢাবিতে নিহত তোফাজ্জল

১১

ঢাবিতে নিহত তোফাজ্জলের পরিচয় কী

১২

চেন্নাইয়ে ৪২ বছর আগের স্মৃতি ফেরালেন শান্ত

১৩

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন / নিউইয়র্কে ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক হচ্ছে না

১৪

হত্যার আগে ভাত খেতে দেওয়া হয় তোফাজ্জলকে

১৫

ফের ৫ দিনের রিমান্ডে আনিসুল হক ও সালমান

১৬

কর্মস্থলে যোগদান করলেন জবির নবনিযুক্ত উপাচার্য রেজাউল করিম

১৭

ঢাবিতে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

১৮

জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচকে ১১ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

১৯

চেন্নাই টেস্টে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

২০
X