সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে দেশ নির্বাচনী রোডম্যাপে উঠবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা সবাই কাজের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস-ভালোবাসা অর্জন করি। জনগণের সঙ্গে থাকি, জনগণকে সঙ্গে রাখি।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ গণসমাবেশ হয়।
দেশের নারী-শিশুসহ সকল শ্রেণির জনগণ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষ বন্দুকের সামনে বুক পেতে দিতে রাজি তবুও তারা স্বৈরাশাসনকে মেনে নিতে রাজি নয় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্র, রাজনীতি, শাসন-প্রশাসন হওয়ার কথা ছিল গর্ভমেন্ট অব দি পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। অথচ গত ১৫ বছর বাংলাদেশে মাফিয়া শাসন চালু করা হয়েছিল, দেশে বিদেশে পলাতক বিনাভোটের সেই সরকারের পরিচয় হয়ে উঠেছিল গর্ভমেন্ট অব দি মাফিয়া, বাই দ্য মাফিয়া, ফর দ্য মাফিয়া।
তিনি আরও বলেন, এই মাফিয়াচক্র দেশকে সম্পূর্ণ ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। দেশকে আমদানি নির্ভর, ঋণ নির্ভর এবং পরনির্ভরশীর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। মাফিয়া চক্র দেশের ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে দিয়েছিল। গত দেড় দশকে দেশ থেকে ১৭ লাখ কোটি টাকারও বেশি পাচার করে দিয়েছিল এরা। পাঁচই আগস্টের পতিত স্বৈরাচারের বেপরোয়া দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে দেশের ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ছাড়িয়েছে।
মাফিয়া চক্রের প্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের চক্রটি প্রশাসনে এখনো সক্রিয় মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুতরাং, অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। জনগণকে তাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকারকে জবাবদিহিমূলক থাকতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বেশ কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ভোটার আড়াই কোটি বেড়েছে। কিন্তু তারা কেউ ভোট দিতে পারেননি। বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক নারী ও তরুণ প্রজন্মকে রেখে দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে যাত্রার জন্য আরও কিছু সময় পাড়ি দিতে হবে। এজন্য সন্ত্রাস নয় বরং ধৈর্য ধরতে হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন মানে, রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন। জনগণের সরকার না হওয়া পর্যন্ত সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের জবাবদিহিতা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। তবে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া সংস্কার টেকসই হয় না।
সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সমাবেশের সমন্বয় করছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল। সঞ্চালনা করছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ সদস্য সচিব আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন।
মন্তব্য করুন