বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, রাসুল (সা.) বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছিলেন। পবিত্র কালামে হাকিমে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতরূপে প্রেরণ করেছি।’ তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতে মুক্তির জন্য একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব ও রাসুল (সা.)-এর প্রদর্শিত আদর্শকে গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বিশ্বনবী (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে সমাজ পরিবর্তনে আপসহীন ভূমিকা রাখতে সবার প্রতি আহবান জানান।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের শেরেবাংলা নগর থানা আয়োজিত সিরাতুন্নবী (সা.) এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও থানা আমীর আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত মুফাসসিরে কোরআন মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমেদ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মোহাম্মদপুর জোন পরিচালক মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির শাহ আজিজুর রহমান তরুণ, বায়তুলমাল সেক্রেটারি হুমায়ন কবির, থানা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ শাহজাহান, হাফেজ সাইফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার সুজন, মনজুরুল ইসলাম ও এডভোকেট তাওহীদুর রহমান, ওয়ার্ড সভাপতি জামাল উদ্দিন পাঠান, ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল ইসলাম, আব্দুর কাইয়ুম সোহাগ ও শাহাদ নূরুল্লাহ প্রমুখ।
রেজাউল করিম বলেন, গোটা বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উৎকর্ষতা এসেছে। মানুষের জীবনাচারণ, বোধ-বিশ্বাস, রুচিবোধ, কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। জাগতিক ও বৈষয়িক শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে ব্যাপকভাবে। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, মানুষের বহিরাভরণ জৌলুশপূর্ণ ও দৃষ্টিনন্দন হলেও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তির প্রত্যাশা বরাবরই অধরাই থেকে গেছে। বিশ্বের সকল ক্ষেত্রেই অবক্ষয় ও অশান্তির জয়জয়কার চলছে।
মূলত মানব রচিত মতবাদের কারণেই গোটা বিশ্বই এখন অশান্ত হয়ে উঠেছে। রাসুল (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদা ওহির বিধান অনুসরণের মাধ্যমে প্রায় অর্ধেক পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিয়েছিলেন।পরবর্তীতে মুসলিম শাসকদের মধ্যে যারা আল্লাহর নির্দেশিত পথ ও রাসুল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে শাসনকার্য পরিচালনার চেষ্টা করেছিলেন তারাও সমাজ, রাষ্ট্র ও বৈশ্বিক পর্যায়ে শান্তি, প্রগতি, উন্নয়ন, অগ্রগতি সর্বোপরি ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় সফল ও স্বার্থক হয়েছিলেন। তাই বর্তমান বিশ্বকে শান্তির নীড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওহির বিধান অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ইসলাম আল্লাহর পক্ষ থেকে অদ্বিতীয় ও পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। কালামে পাকে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম’ (সুরা আল ইমরাম-১৯)। অনত্র বলা হয়েছে, ‘যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন তালাশ করে, কখনোই তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (সুরা আল ইমরান-৮৫)।
মূলত আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৎ কাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করার মিশন দিয়েই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কালামে হাকীমের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব হয়েছে। সুতরাং তোমরা সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অন্যায় কাজে বাধা দেবে আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে (সুরা আল ইমরান-১১০)। তাই বিশ্বমানবতার ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদের দাওয়াতি কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। তিনি রাসূল (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়াও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে তেজগাঁও উত্তর থানার উদ্যোগে রাজধানীতে একটি সিরাত (সা.) র্যালী অনুষ্ঠিত।
র্যালীটি শাহীনবাগ থেকে শুরু হয়ে নাখালপাড়া, মহাখালী বাস স্টেশন প্রদক্ষিণ নাবিস্কো মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, থানা আমির হাফেজ আহসান উল্লাহ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি নাসিফুল ইসলাম, জামায়াত নেতা কাজী মুজিবুর রহমান, এনামুল হক ও কাজী মহসিন খান প্রমুখ।
মন্তব্য করুন