কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের পাশে তারেক রহমান

রোববার দুপুরে আহতদের দেখতে যান ডা. রফিকুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
রোববার দুপুরে আহতদের দেখতে যান ডা. রফিকুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের খোঁজ নেওয়া অব্যহত রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) তারেক রহমানের নির্দেশনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম।

আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য আহতদের দেশের বাইরে পাঠানো হবে। পূর্বের মতো অন্য আন্দোলনের মতো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত আছেন- দল তাদের ব্যাপারে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শহীদদের পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। তবে বিগত আন্দোলনে যারা আহত হয়ে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাননি ও হয়রানির শিকার হয়েছেন সে সব ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তির স্বাদ পায়, গণতন্ত্রের পথ সুগম করে। অসংখ্য ব্যক্তি ও পরিবার রয়েছে, বছরের পর বছর ধরে যাদের ত্যাগের মহিমায় আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘জুলাই গণহত্যায়’ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে শহীদ হন ৮৭৫ জন মানুষ, যার মাঝে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ হওয়া সব শ্রেণি-পেশা-রাজনীতির মানুষের এ বিশাল অংশ যে বিএনপিরই নেতাকর্মী এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং আমাদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, বাম কিংবা ডান আদর্শের অনুসারী, সব মত ও পথের রাজনৈতিক কিংবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি হতাহতের পরিচয় যাই হোক না কেন, প্রতিটি প্রাণের মূল্য ও রক্তের মর্যাদা সমান। আর তাই, সমান গুরুত্বের সঙ্গেই প্রণয়ন করতে হবে প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তালিকা ও নিশ্চিত করতে হবে সুবিচার। শেখ হাসিনার পদত্যাগের জন্য যে জাতীয় ঐক্যমত আমরা দেখতে পাই, তা কিন্তু হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি মূলত অবৈধ সরকারের অত্যাচার-অবিচার, দুর্নীতি-দুঃশাসন, বঞ্চনা-অবজ্ঞা এবং শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে, গণঅভ্যুত্থানে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নেমে আসে বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন। আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল নয়, বিএনপির উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকদের অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানে সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। আর তাই, বিএনপির যে ৬০ লাখ সদস্যের নামে ফ্যাসিবাদের সময় মিথ্যা মামলা হয়েছে, তার সুবিশাল অংশ সাধারণ মানুষের পাশে থেকে, রাষ্ট্রযন্ত্রের ষড়যন্ত্র ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে রুখে দাঁড়ায়। ফলে যার যার অবস্থান থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসে বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দল তথা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলো।

তিনি বলেন, ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুলিশ। একই দিন চট্টগ্রামে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডগুলোতে সমগ্র বাংলাদেশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, বেগবান হয় আন্দোলন। ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় আন্দোলনে পানি বিতরণ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ছাত্র মীর মুগ্ধ। একই দিন যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইরফান ভূঁইয়া ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদল নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ জাবির। এরই মাঝে ১৭ জুলাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের অভিযানের নামে মঞ্চায়িত হয় সাজানো নাটক, বলপূর্বক কার্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাসায় বাসায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির অর্ধশত প্রথম সারির নেতাসহ ৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, জহিরউদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দীন এ্যানি, শিমুল বিশ্বাস, আমান উল্লাহ আমান, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. রফিকুল ইসলাম, নাসিরউদ্দিন অসীম, সাইফুল ইসলাম নীরব, আমিনুল হক, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর নেওয়াজ, নিপুণ রায় চৌধুরী, ডা. সাখাওয়াত শায়ন্তসহ আরও অনেক সক্রিয় নেতা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রুরা ওত পেতে আছে

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ গ্রেপ্তার

‘গণহত্যায় উসকানিদাতা কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে’

জাবিতে গণধোলাইয়ের শিকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য

বৈদেশিক ঋণ আবার ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক পেলেন নৌবাহিনীর ২শ’ সদস্য

সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি, হাসপাতালে মৃত্যু

ডিপিডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতির নতুন কমিটি

১০

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়ে আলী রীয়াজের ফেসবুক স্ট্যাটাস

১১

আলজাজিরার অনুসন্ধান / যুক্তরাজ্যে ৩৬০টি বাড়ি কিনেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী

১২

রূপপুর পারমাণবিকের প্রথম ইউনিটে ডামি ফুয়েল লোডিং শুরু

১৩

মহেশখালী থেকে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে নৌবাহিনী

১৪

নকল সোনার মূর্তি দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২

১৫

কুমিল্লায় ট্রাকচাপায় প্রবাসী যুবক নিহত

১৬

ভুল সংশোধনী ও দুঃখ প্রকাশ

১৭

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে যানজট নিরসনে পুলিশের অভিযান

১৮

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হেরে গেলেন গৃহবধূ শারমিন

১৯

সন্তানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ, সৎ মা আটক

২০
X