জাতি এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, একটা বিশাল পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের নমুনা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা রাজনীতি কী করছি, অতীতে কি করেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব তার একটা ধারণা থাকা দরকার।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দলের বনানী কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, কতিপয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে। যা পরিবর্তনের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণ এটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে ভালো ফলাফল করবে এমন আশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যেকোন সময় যেকোন নির্বাচনে গেলে ভালো ফল করবো।
২০১৮ এর নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সবাই অংশগ্রহণ করেছে। আদর্শগত কারণে অস্তিত্ব সংকটের আশঙ্কায় বিএনপি’র বদলে আমরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিলাম। আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা থাকার পরেও আমরা তাদের অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ করেছি। দেশের জনগণকে সুবিধাভোগী ও নির্যাতিত এই দুইভাগে ভাগ করার যে অপরাজনীতি তৈরি করা হচ্ছিল আমরাই প্রথম তা তুলে ধরে বিরোধিতা করেছিলাম।
২০১৮ থেকে সরকারের পতন পর্যন্ত পর্যন্ত সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় পার্টি সোচ্চার থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যার ফলশ্রুতিতে আমাকে অন্যায়ভাবে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমরা তখনো জনগণের পক্ষে ছিলাম।
২০২৪ এ বিভিন্ন তালবাহানা করে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমাদের সাথে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেও নির্বাচনে তা রক্ষা করা হয়নি। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন হতো না বা নির্বাচন বৈধতা পেতনা এই রকম পরিস্থিতি ছিল না।
আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি, লাগামহীন স্বজন প্রীতি, দুর্নীতি-দুঃশাসনের জন্য এমন মন্তব্য করে সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা বলেন, ছাত্রদের এই আন্দোলনেও আমরা প্রথম দিন থেকেই ছাত্রদের সাথে ছিলাম। সংসদেও আমরা বলেছি, কোটা প্রথা সংবিধান সম্মত নয়।
বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের সাথে মামলার আসামি করা হচ্ছে জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, এটা মোটেই কাম্য নয়। আমরা জনগণের সাথেই ছিলাম। জনগণ পরিবর্তন আশা করে বুকের রক্ত দিয়ে আওয়ামী সরকারকে উৎখাত করেছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, মো. মোস্তফা মহসিন, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর হোসেন, সুলতান আহমেদ সেলিম, মো. শফিউল্ল্যাহ শফি, শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এম এ রাজ্জাক, এলাহান উদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন