পদে পদে ব্যর্থতায় অবৈধ আওয়ামী সরকার এখন দিশেহারা মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন যারা মালিন্যের উর্ধ্বে উঠে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পারে না। কারণ এদের রাজনৈতিক দর্শনে বিকৃত ক্ষমতা চর্চার দৃষ্টান্ত ছাড়া জনগণের ক্ষমতার ওপর আস্থার ইতিহাস নেই। এরা স্বৈরতন্ত্রকে অন্তরঙ্গ বন্ধু বলে মনে করে নিজেরা যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় এসে ভয়ঙ্কর স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। তাই গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে ক্রমাগত অসত্য প্রচার, অপবাদ এবং বানোয়াট আষাঢ়ে গল্পের উপরই ভর করে টিকে থাকার যাবতীয় ভয়াল চক্রান্তে লিপ্ত থাকে।
কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আখ্যায়িত করেছে এই মর্মে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন এজেন্সি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ এবং প্রচার করতে গণমাধ্যমের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাতে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো- বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে রায় দেয়নি কানাডার আদালত। কানাডার আদালতের ২৬ পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ রায়ের ২য় পৃষ্ঠার ৩নং সেকশনে বলা হয়েছে— ‘ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এমন কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ পায়নি, যাতে প্রতীয়মান হয় যে, বিএনপি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত কোনো সংগঠন।’ ২৬ পাতার সম্পূর্ণ রায়টি কানাডার ফেডারেল কোর্টের ওয়েবসাইটে এখনো বিদ্যমান। কিছু কিছু গণমাধ্যম প্রকৃত বিষয়টি যাচাই না করে ফ্যাসিস্ট সরকারের হুকুমে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যা সত্যানুসন্ধানী গণমাধ্যমের মূলনীতির সাথে সামঞ্জস্যহীন। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে উপরের চাপে এহেন পরিবেশিত সংবাদ গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। যাচাই-বাছাইহীন মিথ্যা রিপোর্টের জন্য জনমনে সমালোচনার ঝড় বইছে।
আরও পড়ুন: দেশের মানুষ সরকারের খেলা ধরে ফেলেছে : মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, পদে পদে ব্যর্থতায় অবৈধ আওয়ামী সরকার এখন দিশেহারা। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রকে পীড়ণযন্ত্রে পরিণত করে একদিকে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী বিরোধীদলের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে পৈশাচিক বর্বরতা, অন্যদিকে ভিত্তিহীন এবং কাল্পনিক কাহিনি বানিয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ঝাপসা করার জন্য একের পর এক বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। দুঃশাসনের সংকট অনেক ঘন হয়ে এসেছে বলেই এরা অপপ্রচার আর ভুয়া তথ্যকে রাজনৈতিক ইশতেহার বানিয়েছে। অন্য দেশের আদালতের রায়কেও বিকৃত করতে তারা দ্বিধা করেনি। শেখ হাসিনা জানেন- দেশে-বিদেশে তিনি এখন বন্ধুহীন এবং তার গ্রহণযোগ্যতা শূন্যেরও নিচে। রিজভী আরও বলেন, শেখ হাসিনা জনসমর্থনের এখন আর তোয়াক্কা করেন না। এই কারণে দেশকে ধ্বংসের অতলে ঠেলে দিয়েও নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখতে এক মানবতাহীন, মনুষ্যত্বহীন স্বৈরশাসকের অবয়ব ধারণ করেছেন। জাল জালিয়াতি এবং লুণ্ঠনের নীতি বাস্তবায়নে নিজেদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে। এদের পতন এখন সন্নিকটে, তাই বিদায়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পৃথিবীর সব নির্দয় স্বৈরশাসকরা নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীই মনে করে। সেজন্য অবৈধ শাসকগোষ্ঠী অবলীলায় কানাডার আদালতের রায়কেও জাল করতে দ্বিধা করেনি। আমি দিনে দুপুরে কানাডার আদালতের রায়কে ‘টেম্পারিং’ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করার সরকারের হীন ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন