চট্টগ্রামের পটিয়ায় ৬৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের অভিযোগে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের পটিয়া পৌর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশিদ মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান পটিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস রোডে যাত্রীবাহী বাসের গতিরোধ করে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) মামুনকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ইতোমধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছেন।
যুবদলের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বহিষ্কৃত নেতাদের অপকর্মের কোনো দায়দায়িত্ব দল নিবে না এবং যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. মামুনুর রশিদ মামুনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট দুপুর ১.২০ থেকে দুপুর ১.৩৫ টায় পটিয়া থানাধীন কচুয়াই ইউনিয়নের ফারুকী পাড়া সাকিনস্থ পটিয়া বাইপাস সংলগ্ন অভিমুখী রাস্তার উপর জনৈক রুবেল কান্তি দাসের গাড়ির গতিরোধ করে গাড়ি থেকে নামিয়ে ৬৫ ভরি সোনাসহ অর্থ জোর করে ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় পটিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের হয়, যা দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টিগোচর হয়। ইতোমধ্যে দলীয় সিদ্ধান্তে অনুযায়ী মোহাম্মদ মামুনের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তার এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। অতএব, ওই বিষয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশক্রমে আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
এদিকে স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও এলাকার রিদি গোল্ড ফ্যাশন নামে একটি স্বর্ণালংকারের দোকানের মালিক রুবেল দাশ বাদি হয়ে পটিয়া থানায় মামলা করেন।
মামলায় আসামি করা হয়, পটিয়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন, তার সহযোগী যুবদল কর্মী মো. মনির এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও দুজনকে।
রুবেল দাশের দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘২৭ আগস্ট রুবেল দাশের দোকানের কর্মচারী রূপন দাশ ৬৫ ভরি সোনার গয়না নিয়ে পূরবী পরিবহনের বাসে করে চট্টগ্রাম নগরীর দিকে যাচ্ছিলেন। সেদিন দুপুর দেড়টার দিকে গাড়িটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া বাইপাস ফারুকী পাড়া এলাকা অতিক্রমের সময় পূরবী পরিবহনের সামনে একটি মোটরসাইকেলে দুজন এবং একটি মাইক্রোবাসে করে দুজনসহ মোট চারজন লোক গিয়ে বাসটি থামিয়ে ফেলে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এজাহারে বলা হয়, ‘বাস থামলে ওই চারজন বাসে উঠে রূপন দাশের আসনের সামনে গিয়ে বলতে থাকে, রূপন ছাত্রলীগের কর্মী। চার থেকে পাঁচজনকে খুন করে পালিয়ে যাচ্ছে। এ অভিযোগ করার পরপরই রূপনকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। তারপর টেনে রূপনকে বাস থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। চলন্ত মাইক্রোবাসে গলায় ছুরি ধরে রূপনের ব্যাগে থাকা ৬৫ ভরি স্বর্ণালংকার, একটি মোবাইল ফোন, দুই ভরি ওজনের রূপার ব্রেসলেট এবং নগদ ৫৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে চোখ বাঁধা অবস্থায় রূপনকে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে দেয়।’