জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেছেন, নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণে আপনারা কেউ প্রতিশোধপরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। বরং অন্যায়-অবিচারের শিকার হলে আইনগত পদক্ষেপ নিন। তবে খেয়াল রাখবেন নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানিমূলক হামলা-মামলার শিকার না হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে ‘বৈষম্যহীন, নিরাপদ, মানবিক বাংলাদেশ গড়ায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
যুবদল সভাপতি বলেন, বিএনপিতে অন্যকোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বা অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে যোগদান করানো যাবে না। দলের নাম ব্যবহার করে যারাই অপরাধ করবে তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে। তাহলেই দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।
বন্যা প্রসঙ্গে মোনায়েম মুন্না বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলের বন্যার করাল গ্রাসে প্রায় এককোটি মানুষ কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছেন। অনেক সম্পদ নষ্ট হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, সাধ্যমতো বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ষড়যন্ত্র কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে গত ১৫ বছরের অনাচার অবিচার জনগণকে ভুলিয়ে দেয়া যাবে না। বিএনপি ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব ইনশাআল্লাহ। গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি।
মোনায়েম মুন্না বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জুলাইয়ের গণহত্যা যারা করেছে তাদের ক্ষমা নয়, বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনার তৈরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অত্যাচার থেকে আমরা কেউ রেহাই পাইনি। কথায় কথায় মামলা রিমান্ডে নিয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে। শেখ হাসিনার নিপীড়ন থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমানসহ আমরা কেউ বাদ যায়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়াই-সংগ্রাম করছে। দলটির সাতশ’র অধিক নেতাকর্মী গুম হয়েছে। দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শুধু গণতান্ত্রিক সংগ্রামের জন্য ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। শুধু যুবদলের ৩৫ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে বলে জানান মুন্না।
যুবদল সভাপতি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাজার মাইল দূরে বসে বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দল পরিচালনা করছেন। তিনি বিএনপি ও যুবদলকে একটি শক্তিশালী মাঠের সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চান। বিএনপির রাজনীতিতে যুবদল সবসময় বড় ভূমিকা পালন করে বলে দাবি করেন তিনি।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ উজ্জ্বল, লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের আহবায়ক রেজাউল করিম লিটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহাজাহান, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিম, খাগড়াছড়ি জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুবুল আলম সবুজ, ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, বান্দরবান জেলা যুবদলের সভাপতি মো. জহির উদ্দিন মাসুম, রাঙামাটি জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এসএম মুরাদ চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন, লক্ষীপুর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হালিম হুমায়ূন, বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, ফেনী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার।
এতে চট্টগ্রাম সাংগঠনিক বিভাগের আওতাধীন মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌর শাখা যুবদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।