ড. রেজা কিবরিয়া ও ভিপি নুরুল হক নুরের বিরোধের কারণে বিভক্ত হওয়া গণ অধিকার পরিষদের দুই পক্ষকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দল দুটির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা।
একই সঙ্গে তারা ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। যদি এই দাবি না মানা হয় তাহলে গণ অবস্থানসহ বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি প্রদান করেছেন তারা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণ অধিকার পরিষদের কর্মী মো. আল আমিন আটিয়া আলটিমেটাম দিয়ে বলেন, গণ অধিকার পরিষদের তৃণমূল পর্যায় থেকে আমরা সংগঠনের দুই পক্ষকে আজ থেকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি আলোচনায় বসার জন্য। যদি এ সময়ের মধ্যে তারা আলোচনায় না বসে তাহলে জাতীয় প্রেস ক্লাব বা যে কোনো জায়গায় আমরা যুব, গণ ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা গণঅবস্থান শুরু করব।
দুই পক্ষের শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যদি আপনারা ঐক্যবদ্ধ না হন তাহলে আগামীতে আপনাদের অবস্থা হবে ছোটখাটো দোকানদারদের মতো। দুই-চারজন কর্মী নিয়ে আপনাদের বসে থাকতে হবে।
এক লিখিত বক্তব্যে আল আমিন বলেন, গত ৩৬ জুলাই ছাত্র-জনতার এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২য় বার স্বাধীনতা লাভ করেছে। এই স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রয়োজন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার স্বৈরাচারী ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশের ঐহিত্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে কলুষিত করার কারণে তারা আজ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া, যা এ দেশের গণতন্ত্রে শূন্যতা তৈরি করেছে।
২০১৮ সালের ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা ছাত্র অধিকার পরিষদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আমাদের এই সংগঠনটি রাজপথে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কারণে দেশব্যাপী তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। জনগণের ব্যাপক আস্থা অর্জন করতে শুরু করে, যা আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য জনগণের দল হিসেবে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল।
তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে গণ অধিকার পরিষদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি হয়। যার দরুন তৃণমূলে নেতাকর্মীদের গণ অধিকার পরিষদের কার্যক্রমে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। বেশিরভাগ জেলা ও মহানগরে দ্বৈত কমিটির নেতৃত্ব থাকায় জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে। আমরা গণ অধিকার পরিষদের তৃণমূল পর্যায় থেকে আজ এ রেষারেষি থেকে বের হয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য দুই পক্ষকে সহনশীলতা, ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতার সঙ্গে কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। সেগুলো হলো- উভয়পক্ষ ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে হবে; অতীতের কার্যক্রম নিয়ে কোনো ধরনের টানাটানি করা যাবে না; উভয়পক্ষের মূল দলের কেন্দ্রীয় কমিটি স্থগিত করে আলোচনায় বসতে হবে।
এছাড়া, সমাধানের পথ হিসেবে উভয়পক্ষের নিকট একটি রূপরেখা প্রস্তাব করা হয়। তা হলো সাংগঠনিক কার্যক্রমের গতিশীলতা ধরে রাখার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন উপদেষ্টা কমিটি ও নিরপেক্ষ শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদ বাংলা কলেজের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, নেত্রকোনা জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম ও সহসভাপতি রয়েল খানসহ অনেকেই।
মন্তব্য করুন