বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, আওয়ামী গুণ্ডাবাহিনী আমাদের সন্তানদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তাদের রাজপথে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশের পবিত্র জমিনকে কলঙ্কিত ও রক্তাক্ত করেছে। তাই আওয়ামী এই সন্ত্রাসীদের ক্ষমা করার কোনো সুযোগ নেই। বরং শ্রমিক-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই খুনিদের তালিকা প্রস্তুত এবং এদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। অন্যথায় শহীদদের আত্মত্যাগ সার্থক ও অর্থবহ হবে না। তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শ্রমিক-জনতাকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। সেলিম উদ্দিন সব ধরনের অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সাম্প্রতিক শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মোহাম্মদপুর অঞ্চল আয়োজিত শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মোহাম্মদপুর অঞ্চল পরিচালক শ্রমিক নেতা মিজানুল হকের সভাপতিত্বে ও অঞ্চল সহকারী পরিচালক মোশতাক আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, মহানগরী সভাপতি মাওলানা মহিব্বুল্লাহ, মোহাম্মদপুর অঞ্চলের উপদেষ্টা জিয়াউল হাসান ও মহানগরী উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এইচএম আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, বিগত প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগ দেশে অপশাসন-দুঃশাসন চালিয়েছে। আওয়ামী শাসনামলে সারা দেশে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা চালিয়ে দেশকে একটি ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়াতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু দেশের নতুন প্রজন্ম বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তাদের স্বৈরাচারী ও বাকশালী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। দুঃখজনক খবর হলো- রক্তের দাগ মুছতে না মুছতে বিভিন্ন জায়গায় কিছু দুষ্কৃতকারী, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি শুরু করেছে। দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করতে হবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদ ও তাদের পরিবারকে কোনোভাবেই অবহেলা করার সুযোগ নেই বরং তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতাসহ যথাযথভাবে সম্মান করতে হবে। একটি গণমুখী ও কল্যাণকামী রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত শহীদ পরিবারের জন্য সাধ্যমতো সবকিছু করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কোনো পিছপা নেই। আমরা আমাদের সাধ্যমতো শহীদদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রত্যেক পরিবারকে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছি। আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি এবং তারা পূর্ণ সুস্থতা অর্জন না করা পর্যন্ত জামায়াত তাদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাবে। এমনকি তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হবে। আন্দোলনে বিজয়ীরা যাতে কোনোভাবে কষ্ট না পায় সেদিকেও জামায়াতের সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। তিনি সাম্প্রতিক আন্দোলনে শহীদদের যথাযথ মর্যাদা, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং বিজয়ীদের প্রতি যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান । সেলিম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী নৈরাজ্যবাদীদের এখন বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নতুন করে স্বপ্নে দেশ গড়তে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। অন্যথায় অর্জিত বিজয় অর্থবহ হয়ে উঠবে না।
এছাড়াও জামায়াতে ইসলামী মিরপুর জোনের উদ্যোগে মিরপুর সিটিমহল চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জোন পরিচালক ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, মিরপুর পশ্চিম থানা আমির আব্দুল মান্নান, উত্তর থানা আমির মনিরুল ইসলাম মৃধা, দক্ষিণ থানা আমির আলাউদ্দিন সোহেল, শাহআলী থানা আমির ডা. মঈন উদ্দিন, দারুসসালাম থানা আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ রুমীসহ সব থানার নায়েবে আমির ও সেক্রেটারিরা।