সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে বিরোধী দলসমূহের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বাধাগ্রস্ত ও ভন্ডুল করতে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা চালিয়ে বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
রোববার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে এক মশাল মিছিলপরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ অভিযোগ করেন তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, গতকাল (শনিবার) বিরোধী দলসমূহের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রশাসনের কিছু লোক এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা চালিয়ে বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। আজ আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলেও পুলিশ উস্কানি দিয়ে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে বাসে আগুন দিয়ে আমাদের নামে মামলার ষড়যন্ত্র করেছিল। তাই এখন থেকে প্রতিটি কর্মসূচিতে বিরোধী দলসমূহের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।
প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, জুলাই থেকে আপনাদের আমলনামা লেখা শুরু হয়েছে। যারা ফ্যাসিবাদের পাশে দাঁড়িয়ে জনগণের বিপক্ষে যাবেন- জনগণ তাদের প্রতিহত করবে।
নুর বলেন, জনগণের ওপর অত্যাচার, হামলা-মামলা করে জোরজবরদস্তির মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকাকে বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই সমর্থন করছেন না। ছাত্রলীগ-যুবলীগের ভাইদের বলব- অতিউৎসাহী হবেন না। যেসব নেতা, এমপি, মন্ত্রীর কথায় হামলা-মামলা করছেন, পরিস্থিতি খারাপ হলে তারা দেশ ছেড়ে পালাবে। আপনাদের দেশে থাকতে হবে, কাজেই ভালো হয়ে যান।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এখন থেকে হামলা হলে পাল্টা প্রতিরোধ হবে। আমাদের রক্ত ঝরালে আমরাও তাদের রক্ত ঝরাব। আমাদের আন্দোলন কোনো দল বা নেতার বিরুদ্ধে নয়, আমাদের আন্দোলন দেশ-জাতি, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষার আন্দোলন। কাজেই আন্দোলন সফল করতে আমাদের যা করার দরকার, আমরা তাই করব।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, শনিবার অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির শীর্ষনেতাদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করার পর গ্রেপ্তার করে আবার খাওয়ানোর নাটক মঞ্চস্থ করে ছবি তুলে ফেসবুক ছেড়ে দিয়েছে। যা বিরোধীদলের আন্দোলনে নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা ও অবিশ্বাস তৈরির অপচেষ্টা। পুলিশের নিরপেক্ষতা আজ জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বলেছেন- পুলিশকে সহযোগিতা করতেই ছাত্রলীগ-যুবলীগ মাঠে ছিল। তো পুলিশের আর কী দরকার? ছাত্রলীগ-যুবলীগকেই বেতন ভাতা দেন! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন বেআইনি বক্তব্য দিয়ে তিনি পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার পতন আন্দোলন সারাদেশে শুরু হয়ে গেছে। জনগণ ফলাফল না নিয়ে আর মাঠে ফিরবে না। জনগণের এই আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানে রুপ দিতে শহীদ হওয়ার শপথ নিয়ে রাজপথে নামুন। ইনশাআল্লাহ ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে শিগগিরই জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসবে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শাকিলউজ্জামানের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার পোদ্দার, সোহরাব হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন : দেশকে বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে : তথ্যমন্ত্রী
মন্তব্য করুন