কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৪, ১০:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণহত্যার দায়ে মহাজোটের সবগুলো দলকে নিষিদ্ধের দাবি পিআরপির

রাজধানীর পল্টনে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন জনতার অধিকার পার্টির (পিআরপি) চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর পল্টনে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন জনতার অধিকার পার্টির (পিআরপি) চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। ছবি : কালবেলা

জুলাই গণহত্যার নির্দেশ দেওয়াসহ আওয়ামী লীগের সকল অপকর্মে জড়িত থাকার দায়ে জাতীয় পার্টির জিএম কাদের, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও রওশন এরশাদ এবং হাসানুল হক ইনুর জাসদ, রাশেদ খান মেননের বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর দল তরিকত ফেডারেশনসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের সবগুলো দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে জনতার অধিকার পাটি (পিআরপি)।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর পল্টনের কালভার্ট রোডে প্রীতম জামান টাওয়ারের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবিসহ রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন জনতার অধিকার পার্টির (পিআরপি) চেয়ারম্যান মো. তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। এ সময় সংগঠনের মহাসচিব এম এ আর রাজা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মোশার হোসেন ও নিলা আক্তার, প্রচার সম্পাদক জাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ে নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জনতার অধিকার পার্টির দাবিগুলো হলো-

১। গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে অনতিবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

২। বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সকল নিহতের পরিবারকে বর্তমানে চলমান মুক্তিযোদ্ধা ভাতার সঙ্গে যুক্ত করে অন্তত ১৫ বছর বা তদুর্ধ সময় সরকারিভাবে ভাতা প্রদান করতে হবে এবং তাদের পরিবারের অন্তত ১ জন সদস্যকে চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

৩। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার পতনের এই আন্দোলনে আহতদের সবাইকে সরকারি খরচে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে নিজ খরচে চিকিৎসা করেছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং প্রত্যেক আহতকে (শারীরিকভাবে আনফিট হলেও) সরকারি ব্যবস্থাপনায় মানসম্মত চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঠেকাতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের মিটিং থেকে আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে জাতীয় পার্টি (জিএম কাদের, রওশন এরশাদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু গ্রুপ), জাসদ, বাসদ, মাইজভান্ডারিসহ মহাজোটের ১৪টি দল গণহত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। গণহত্যার দায়ে এই দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে দোষী নেতাদের এখনি গ্রেপ্তার করতে হবে।

শুধু তাই নয়, এই দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের গুম, খুন, ভোট চুরি, দুর্নীতিসহ সকল অপকর্মের সহযোগি ছিল। তাই জিএম কাদের, রওশন এরশাদ, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, রাশেদ খান মেনন, শিরিন আখতার, নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারিসহ এসব দলের সব শীর্ষ নেতাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫। ভোটাধিকার হরণ সরাসরি দেশের সংবিধানে দেওয়া নাগরিক অধিকার হরণ। বিগত তিন জাতীয় নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনগুলোতে যেভাবে প্রকাশ্যে জনগণের নাগরিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল তার জন্য গত তিন সংসদের সকল ভোটচোর এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি/পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারকে ভোট চুরির দায়ে সাজা দিয়ে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। যেন আর কখনো কেউ জনগণের ভোটাধিকার হরণের সাহস না করে।

৬। বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, বনভূমি-জলাভূমি, মাঠ, পার্ক, পাহাড় দখল করে খেয়েছে তা দেশকে চরমভাবে পরিবেশ বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এসব দখলদার যত বড় ক্ষমতাশালী হোক না কেন প্রাকৃতিক ভূমিগুলোকে তাদের থেকে উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থায় ফেরত দিতে হবে।

৭। পুলিশসহ কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারি আমলাদেরকে কেউ যেন রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে না পারে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার এবং রাষ্ট্র উভয়ের মধ্যে গঠনগত তফাৎটা স্পষ্ট করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে অর্থাৎ দেশের নাগরিকের ওপর সকল বাহিনীর মারণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে।

৮। ছাত্র-জনতার আন্দোলনসহ গত ১৬ বছরে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে যেসব গণমাধ্যম পেশাদারত্বের বাইরে গিয়ে এক তরফা মিথ্যাচার করেছে গণহত্যায় সহযোগিতার দায়ে সেগুলোর সম্পাদক বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে আজীবনের জন্য গণমাধ্যম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। গণমাধ্যমের সংস্কার নিশ্চিত করের জনগণের কণ্ঠস্বরে পরিণত করতে হবে।

৯। দুর্নীতি দমন কমিশনের বর্তমান প্রশাসন সবাই আওয়ামী লীগের দলদাস। এদের পরিবর্তন করে দুদককে কার্যকর করতে হবে। তারপর দুদকের মাধ্যমে সকল দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ ও আমলার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশে পাচার হওয়া সব টাকা ফেরৎ আনতে হবে।

১০। সকল সিন্ডিকেট ভেঙে কৃষকের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করে কৃষকদের শক্তি বৃদ্ধি করা এবং দ্রুত দ্রব্যমূল্য জনগণের নাগালে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

১১। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের বিদেশ-আসা যাওয়ায় পথে এয়ারপোর্টে সর্বোচ্চ সন্মান দিতে হবে। কোনো প্রবাসী বিদেশে মারা গেলে তার মরদেহ সম্মানের সঙ্গে দেশে আনার ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে এবং যথাযথ মর্যাদায় দাফন করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারতে সাত দিনের ‘জাতীয় শোক’ ঘোষণা

কোথায় চলবে ক্ষতিগ্রস্ত ৫ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম?

জেসিও আমিনুল ইসলামের বক্তব্য তার একান্ত ব্যক্তিগত মন্তব্য

কুষ্টিয়া চিনিকলের যন্ত্রাংশ অন্য চিনিকলে স্থানান্তরে বাধা, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

বায়ুদূষণে শীর্ষে কলকাতা, ঢাকায় বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস 

চট্টগ্রামে প্রাথমিকের ২৪ শতাংশ বই পৌঁছেছে

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত হয় সেই বিমান

পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রিতে

পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া ভারতের প্রথম অহিন্দু প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং

৩২ লাখ টাকার সেতুতে ৭ বছরেও উঠতে পারেনি কেউ

১০

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বড় নিয়োগ, পদ সংখ্যা ১৮৬

১১

মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

১২

টিভিতে আজকের খেলা

১৩

আজকের নামাজের সময়সূচি

১৪

শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৫

ইতিহাসের এই দিনে যত স্মরণীয় ঘটনা

১৬

সুনামগঞ্জে নদীতে বালু উত্তোলনে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০

১৭

খালাতো বোনের বিয়ে খেতে এলেন ছাত্রলীগ নেতা, অতঃপর...

১৮

পাল পাড়া মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত 

১৯

সরকারি বাঙলা কলেজে ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আনন্দ মিছিল

২০
X