গতকাল শনিবার ঢাকার প্রবেশপথে বিএনপি ও সমমনা দল এবং জোটগুলোর পূর্বনির্ধারিত শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে বিনা উসকানিতে পুলিশের ন্যক্কারজনক আক্রমণ, অপেশাদার আচরণ এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী হামলা এবং সিনিয়র ও জাতীয় নেতাদের লাঞ্ছনা-হয়রানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
রোববার (৩০ জুলাই) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নয়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি।
সেই দাবিকে আমলে না নিয়ে উপরন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী অনির্বাচিত সরকার হামলা মামলা করে বিরোধীদলের গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন দমনের ন্যক্কারজনক পথ বেছে নিয়েছে।
তারা বলেন, সভা-সমাবেশ করা সবার মৌলিক ও নাগরিক অধিকার। দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে বিরোধীদল সরকারের অন্যায়-অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি দলের নামধারী সন্ত্রাসী হামলা-বাধা দেওয়া সরকারের ফ্যাসিবাদী রূপের বহিঃপ্রকাশ। তারই প্রমাণ দেখা গেল শনিবার রাজধানীতে বিএনপিসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সশস্ত্র হামলার মাধ্যমে। নেতৃদ্বয় বলেন, পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের অস্ত্রধারী দুষ্কৃতিকারীদের হামলায় আহত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মো. আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মো. আমিনুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তরিকুল ইসলাম তারিকসহ অসংখ্য নেতাকর্মী। এ ছাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা আলমগীর হাসান সোহান, পাঠাগারবিষয়ক সহসম্পাদক সাজিদ হাসান বাবু ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মো. ইয়াহিয়াসহ অনেককে বেধড়ক মারধরের পর পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে, যা অগণতান্ত্রিক ও অপেশাদার আচরণ।
নেতৃদ্বয় বলেন, সরকারের এ ধরনের ফ্যাসিবাদী ও একগুঁয়েমি আচরণ দেশে নতুনভাবে সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে পরিস্থিতি জানান দিচ্ছে; যা দেশের ও দেশের মানুষের জন্য মোটেও সুখকর হবে না বরং নানা ধরনের শক্তির অপতৎপরতার সুযোগ তৈরি করবে।
তারা বিবৃতিতে বলেন, আসলে দেশে-বিদেশে বর্তমান অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের জনসমর্থন এখন তলানিতে। তারা গায়ের জোরে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহারের মাধ্যমে ফের ক্ষমতায় থাকার চক্রান্ত করছে। এবার তাদের পতন নিশ্চিত ভেবেই আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেও হামলা করেছে। নেতারা দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অবিলম্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের ঘোষণা এবং সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। অন্যথায় দলীয় সরকারের অধীনে প্রহসনের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যেকোনো চেষ্টা জনগণ প্রতিহত করবে।
ইউট্যাবের নেতারা আরও বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি যে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচিকে ঘিরে সরকারি দলের পাল্টা কর্মসূচি ও অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। এতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি ও জনগণের জানমালের কোনো ক্ষতি হলে এ দায় সরকারকেই নিতে হবে। নেতৃদ্বয় অবিলম্বে বিরোধী দলের আটক সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
মন্তব্য করুন