বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারগুলোর কষ্ট ও বেদনা আজ পুরো দেশের জনগণের কষ্টে পরিণত হয়েছে। তাদের স্ত্রীরা পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিকে দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন। নতুন এই বাংলাদেশে আমরা ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবের প্রত্যেক শহীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, নতুন দেশ গঠনে গণঅভ্যুত্থানে শহীদরা আমাদের প্রেরণার উৎস। তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আগামীর বাংলাদেশ যেন এই শহীদদের স্বপ্নের আলোকে গড়ে তোলা হয় সে প্রচেষ্টা আমাদের চালাতে হবে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ সাংবাদিক মেহেদী হাসান ও শহীদ জাহাঙ্গীরের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে প্রতিটি পরিবার জোর দাবি তুলছে। দেশ ও জাতির অগ্রগতির স্বার্থে অবশ্যই প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। ন্যায়বিচার পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। জামায়াতের পক্ষ থেকে আমরা প্রতিটি শহীদ পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আপনাদের পাশে থাকব।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার অবশ্যই এসব শহীদদের পাশে দাঁড়াবে। জামায়াতে ইসলামী দেশে মানবতার কল্যাণকামী সংগঠন হিসেবে বসে থাকতে পারে না, আমাদের দায়িত্ব আছে এসব শহীদ ভাইবোনদের পরিবারের জন্য। এই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই আমরা শহীদ ও আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন, মুহাম্মদ কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন জাতির যেকোনো প্রয়োজনে ও ক্রান্তিকালে তারা সবসময় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। তারা হাসিমুখে শাহাদাত বরণ করে আমাদেরকে শিখিয়ে গেলেন অন্যায় ও অসত্য কখনো চিরস্থায়ী হয়না। তিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জাতি ঐক্যবদ্ধ হলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করা সম্ভব, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান তা আবারও প্রমাণ করেছে। ছাত্র-জনতার এই বিজয়ে কালিমা লেপন করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র শুরু চলছে। দেশ বিরোধী ফ্যাসীবাদ এবং আধিপত্যবাদী অপশক্তি থেমে নেই। তাই গৌরবের বিজয়কে অক্ষুন্ন রাখার জন্য সচেতন দেশবাসীকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন