ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা।
সভায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নেতারা অংশগ্রহণ করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে সব ধর্মের ও মতাদর্শের মানুষদের নিয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষার রেইনবো নেশন (জাতি) গড়ে তোলার প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।
বিএনপির সঙ্গে মতবিনিময় প্রসঙ্গে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান ক্রান্তিকালে আমরা দেশের বিরাজিত পরিস্থিতি তুলে ধরেছি। আমরা শান্তি চাই, স্বস্তি চাই, আমরা বাঁচতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের কথাগুলো গণতান্ত্রিকভাবে নানা দলের মধ্য দিয়ে এ দেশে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল- সেই স্বপ্নের গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক দেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চাই।’
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। দল ক্ষমতায় গেলে বিএনপি এটি পজিটিভলি (ইতিবাচকভাবে) বিবেচনা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মহাসচিব। আমরা এখন থেকে অতীতের সব ভুলে গিয়ে সবাই একসঙ্গে কাজ করব।’
মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী, তারা কোনো দলের নয়। যতই চেষ্টা করুক, তারা এই দেশের সম্প্রীতির বন্ধন, সৌহার্দ্য নষ্ট করতে পারবে না। এবারও প্রমাণিত হয়েছে, অনেক চেষ্টা করেও তারা সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য বিনষ্ট করতে পারেনি। সব ধর্মের ও মতের মানুষদের নিয়ে আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষার রেইনবো নেশন গড়ে তুলব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের যে সমস্যা সেটিকে নিজের সমস্যা বলে মনে করি। সেগুলো তুলে ধরে ’৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, আসুন ’২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে আবার সেই চেতনাকে পরিস্ফুটিত করি। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক দেশ নির্মাণ করি।’
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক, প্রেসিডিয়াম মেম্বার কাজল দেবনাথ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মহাসচিব তরুণ দে, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় নেতা রমেশ দত্ত প্রমুখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন